রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

হুমকিতে জেলা পরিষদ নির্বাচন

পদোন্নতি নিয়ে ক্ষুব্ধ ইসি কর্মকর্তারা

গোলাম রাব্বানী

পদোন্নতি নিয়ে দিন দিন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে, বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন তারা। পদোন্নতিপ্রত্যাশী এসব কর্মকর্তা সহকারী সচিব, সহকারী পরিচালক ও উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পর্যায়ের। অনেক উপজেলা অফিসারের অধীনে কাজ করা স্টাফরা পদোন্নতি পেয়েছেন, কিন্তু সেই উপজেলা অফিসার এখনো একই পদে রয়েছেন। অনেকেই ১০-১২ বছর ধরে একই পদে রয়েছেন বলে জানা গেছে। এসব নিয়ে হতাশ কর্মকর্তারা। বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিদায়ের আগে তাদের পদোন্নতি না দিলে অনেক পদ শূন্য থাকবে বলে জানিয়েছে ইসি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা।

পদোন্নতির দাবি নিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর সাধারণ সভা হওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন সার্ভিসেস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের। এ সভা থেকে আন্দোলনের কর্মসূচিও ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বঞ্চিত কর্মকর্তাদের যথাযথভাবে পদোন্নতি না দিলে আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচন হুমকির মুখে পড়বে। কর্মকর্তারা কাজ না করলে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।

সম্প্রতি পদোন্নতিসহ নানা দাবি বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন সার্ভিসেস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ইসির কাছে জানানো হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ইসির যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলী স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত সভার কার্যবিবরণী প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, বর্তমান চাকরিবিধি অনুযায়ী পদোন্নতিতে বাধা না থাকায় অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, উপসচিব/সমমানের পদ, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব/জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা/সমমানের পদে অতিদ্রুত উন্নতির দাবি জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ‘২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ দাবি কমিশন গ্রহণ করবে বলে আশা করছি। তা না হলে অ্যাসোসিয়েশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।’ পদোন্নতির জন্য শূন্যপদের বিষয়ে প্রত্যাশীরা জানান, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ও সমমান পদ পাঁচটি শূন্য রয়েছে, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপসচিব/সমমান পদে উন্নতি দেওয়া হলে আরও ২৫টি পদ শূন্য হবে।

২২ জুলাই সিলেবাস প্রণীত হয়েছে। পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করা হয়নি। তবে সিলেবাস নিয়ে পিএসসি ইতিমধ্যে নানা প্রশ্ন তুলেছে। ইসির কাছে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে। এসব জটিলতার কারণে আগামী বছরের মধ্যেও পরীক্ষা হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা নেওয়ার আগ পর্যন্ত ২০০৮ সালের নিয়োগবিধি অনুযায়ী পরীক্ষা ছাড়াই পদোন্নতি দিতে কোনো বাধা নেই, বলেন একজন কর্মকর্তা। এ বিধির আলোকে আগে দুটি ধাপে পরীক্ষা ছাড়াই আরও ৬৫ জনের পদোন্নতি হয়েছে বলে জানান তারা। কিন্তু বর্তমান কমিশন বিদায়ের আগে পদোন্নতি নিয়ে নানা সংকট সৃষ্টি করছে। একইভাবে ১১০টি সিনিয়র স্কেলের পদ সৃষ্টির বিষয়ে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়কে ইসি বললেও কাজ হচ্ছে না। তারা পাঁচ-ছয় বার শুধু জবাব চেয়ে যাচ্ছেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলে কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন। নিয়োগবিধিতে বলা হয়েছে, কমিশনের নির্ধারিত প্রশিক্ষণ না নিলে ও নির্ধারিত সিলেবাস অনুযায়ী পরিচালিত পরীক্ষায় উন্নীত না হলে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব, একান্ত সচিব (জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব), অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপপরিচালক পদে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে, কমিশনের সিলেবাস প্রণয়ন ও পরীক্ষা না নেওয়া পর্যন্ত এ বিধান প্রযোজ্য হবে না। এ বিষয়ে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত বিধি মেনেই পদোন্নতি দেওয়া হয়। সিলেবাস প্রণীত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিধিমালায় যেভাবে পদোন্নতির কথা বলা হয়েছে, সেভাবে তাদেরও দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর