মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দুর্নাম ঘোচাতে ছোট ভোটে বড় প্রস্তুতি ইসির!

গোলাম রাব্বানী

দুর্নাম ঘোচাতে ছোট ভোটে বড় প্রস্তুতি ইসির!

সদ্যসমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোট, কেন্দ্র দখল ও ভোট জালিয়াতি নিয়ে নানা বিতর্কের মধ্যে পড়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই দুর্নাম ঘোচাতে ৪০৭টি ইউপির বিভিন্ন পদে ও স্থগিত কেন্দ্রের পুনর্নির্বাচনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমনকি ভিন্ন ভিন্ন রঙের ব্যালট ছাপানো হচ্ছে এ নির্বাচনের জন্য। এই ছোট নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রাখা হচ্ছে দিগুণ। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য নিযুক্ত করা হচ্ছে সাব-ইন্সপেক্টরসহ পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য। এ ছাড়া থাকছে বিজিবি, র‌্যাবের মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্সও। বন্ধ ঘোষিত ভোট কেন্দ্রের পুনঃভোটে রাখা হচ্ছে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তবে এই ছোট ছোট নির্বাচনে ইসির এমন ব্যাপক আয়োজনকে ভিন্নভাবে দেখছেন খোদ ইসির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ছোট ভোটের জন্য ইসি এলাহী কাণ্ড করছে। বিগত ছয় ধাপের নির্বাচনে এমন কঠোর অবস্থান নিলে তৃণমূলের এ নির্বাচন অনেক স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হতো বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছোট ছোট এই নির্বাচনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে জেলা প্রশাসক, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানা নির্বাচন অফিসারসহ সব কর্মকর্তাকে ১৮টি বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ রাখা হচ্ছে অন্য নির্বাচনের চেয়ে বেশি। এমনকি  নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে যা প্রয়োজন তাই করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া এই নির্দেশনার অনুলিপি পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরে।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৩১ অক্টোবর ভোট গ্রহণের সময় নির্ধারণ করে ৪০৭টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বিভিন্ন পদে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল সংস্থাটির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খানের স্বাক্ষরিত তফসিল থেকে জানা গেছে, নবম ইউপি নির্বাচনে প্রথম  থেকে ষষ্ঠ দফা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থগিত নির্বাচন এবং কিছু সাধারণ নির্বাচন ও উপ-নির্বাচনের তফসিল দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৬ অক্টোবর, মনোনয়নপত্র বাছাই ৭ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের  শেষ সময় ১৪ অক্টোবর। আর ভোট গ্রহণ হবে ৩১ অক্টোবর।

তফসিল অনুযায়ী, নবম ইউপি নির্বাচনের প্রথম থেকে ষষ্ঠ ধাপ পর্যন্ত বন্ধ ভোট কেন্দ্রে পুনঃভোট ২০২ ইউপিতে এবং বিভিন্ন পদে প্রার্থীরা সমভোট পাওয়ায় পুনঃভোট হবে ৬৫ ইউপিতে। আর মামলা বা অন্য কারণে স্থগিত বা বাতিল করা ৩৩ ইউপিতেও ভোট হবে ৩১ অক্টোবর। এসব ইউপির  কোনোটিতে সদস্য ও কোনোটিতে চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে। আর ৩৬ ইউপিতে সব পদে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে, ৭১টি ইউপিতে বিভিন্ন শূন্য হওয়ায় উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে একই দিন। এদিকে এসব ইউপির মধ্যে ২৩টি ইউপি রয়েছে যেখানে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীও  ভোট দিতে পারবেন। ইসি কর্মকর্তারা জানান, বন্ধ ঘোষিত ভোট কেন্দ্রে ও সমভোট প্রাপ্ত পদে নির্বাচনের অনুষ্ঠানের জন্য ভিন্ন রঙের কাগজে ব্যালট পেপার মুদ্রণ করা হবে। স্থগিত বা পুনঃভোট বা শূন্য উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভিন্ন রঙের ব্যালট প্রয়োজন হবে না।

সর্বশেষ খবর