বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুরনো পদ্ধতির কারণে পাওয়া যায় না তথ্য

আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে গত পাঁচ বছরে আইন মেনে তথ্য পেয়েছেন ৯৬ দশমিক ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৭৬ হাজার মানুষ। আর তথ্য পাননি মাত্র ৪ শতাংশের কিছু কম মানুষ। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল এমনটি জানানো হয়। আর তথ্য না পাওয়ার কারণ বের করতে গিয়ে জানা যায়, প্রশাসনিক যেসব তথ্য এখনো তৈরি হয়নি বা প্রক্রিয়াধীন আছে মূলত সেই তথ্যগুলোই আবেদনকারী পাচ্ছেন না। এ ছাড়া সরকারের কোথাও কোথাও তথ্য সংরক্ষণের প্রক্রিয়াটি এখনো পুরনো। সেই তথ্যগুলো ঠিকভাবে সংরক্ষিত না হওয়ায় আবেদনকারীরা কিছু ক্ষেত্রে তথ্য পাচ্ছেন না। এ তথ্যগুলো পেতে হয়তো আরও কিছু সময় লাগবে। তথ্য কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্র গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এমনটি জানায়। সূত্র জানায়, তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী প্রশাসনের কাছে তথ্য জানতে যারা চান তাদের মধ্যে সাংবাদিকদের হার শতকরা ১৭ ভাগ। অবশিষ্টরা অন্যান্য পেশার। তথ্য না পেলে আপিল করারও সুযোগ আছে। আবেদন করে তথ্য না পেয়ে অভিযোগ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। জানতে চাইলে প্রধান তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তথ্য অধিকার আইনটি একটি আধুনিক আইন। বাংলাদেশকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সার্বিকভাবে উন্নত করার একটি আইন। এ আইনটি জনপ্রিয় করার জন্য আরও বেশি সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কারণ সাধারণ মানুষ সাধারণত আইন বিষয়ে তেমন একটা খবর রাখে না। কিন্তু এ আইন সাধারণ মানুষ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ওপর প্রয়োগ করতে পারবে। এ আইন মানুষকে শাসন করার কোনো আইন নয়। এ কারণে মানুষকে এ আইন সম্পর্কে বেশি জানতে হবে। এতে তারা প্রশাসনের কাছে তথ্য চাইলে প্রশাসনিক কাজকর্ম আরও স্বচ্ছ হবে। সরকারি কাজকর্মে দুর্নীতি কমে আসবে। এর ফলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সমাজেরও উন্নতি হবে। তবে গতকাল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে জানায়, এ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা এবং প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও বাকস্বাধীনতাকে সংকুচিত করার উপাদান থাকায় তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর মূল চেতনা খর্ব হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। টিআইবির এ বিবৃতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান তথ্য কমিশনার বলেন, তথ্য অধিকার আইনটি একটি সুপ্রিম আইন। এ আইনে শুধু রিট করার সুযোগ আছে। আর তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে টিআইবির উল্লিখিত আইন ও নীতিমালা কোনোভাবেই সাংঘর্ষিক নয়। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় বিভিন্ন আলোচনা আছে যা ভিন্ন বিষয়।

দিবস ও কর্মসূচি : আজ আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস। ২০০২ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও তথ্য কমিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন আজ মিলিতভাবে দিবসটি পালন করছে। এ দিবসটি উপলক্ষে তথ্য কমিশন ও বিভিন্ন সংগঠন তথ্য অধিকার নিয়ে শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আজ দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তথ্য কমিশন আয়োজিত দিবসটির মূল অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি থাকবেন। এতে আরও উপস্থিত থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধান তথ্য কমিশনার ড. মো. গোলাম রহমান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মরতুজা আহমদ ও তথ্য কমিশনারবৃন্দ। এ ছাড়া আজ সকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত একটি র‌্যালি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হবে।

সর্বশেষ খবর