বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পদোন্নতি বাণিজ্যের টাকা নিয়ে তুলকালাম

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

১৮ লাখ টাকার বিনিময়ে নয়জনকে টিকিট সংগ্রাহক (টিসি) পদ থেকে ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) পদে পদোন্নতি দেওয়ার ঘটনায় লালমনিরহাট রেল ভবনে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। এ টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় লালমনিরহাট বিভাগীয় রেল ভবনে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। বিক্ষুব্ধরা অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় অভিযুক্ত অপর এক কর্মকর্তা অবস্থা বেগতিক দেখে অফিস থেকে সটকে পড়েন। এ ঘটনায় পদোন্নতিবঞ্চিতদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের অধীন ট্রাফিক বিভাগে টিকিট সংগ্রাহক (টিসি) পদ থেকে ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) পদে নয়জনকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী প্রহরায় নামকাওয়াস্তে পরীক্ষা নেওয়া হয়। একদিনের মাথায় তাড়াহুড়া করে প্রতিজন ২ লাখ টাকা করে ১৮ লাখ টাকা নিয়ে ওই ৯টি পদে গোপনে নয়জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। সরকারি বিধি ১৯৮৫ মতে, একজন প্রার্থীর বিপরীতে চারজন প্রার্থী অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে শুধু প্রতি পদে একজন করে প্রার্থীর পরীক্ষা নিয়ে তাড়াহুড়া করে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ফলে লালমনিরহাট রেল বিভাগের ট্রাফিক সেকশনের পদোন্নতিবঞ্চিত টিকিট সংগ্রাহকদের (টিসি) মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে লালমনিরহাট রেল বিভাগের ট্রাফিক সেকশনে চলাচলকারী ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে না। ফলে সরকার লালমনিরহাট রেল বিভাগে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। লালমনিরহাট রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন টিকিট সংগ্রাহক (টিসি) এ পদোন্নতিকে অবৈধ অভিহিত করে বলেন, যেসব টিকিট সংগ্রাহককে (টিসি) পদ থেকে ৫ বছর চাকরির মেয়াদ পূর্তিতে ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বিনা টিকিটে রেলওয়েতে ভ্রমণের দায়ে আদায়কৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে এ রেল বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা প্রতিজন প্রার্থীর কাছ থেকে ২ লাখ করে টাকা হাতিয়ে নেয়। কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এলাকার সন্ত্রাসী ও মাস্তানবাহিনী নিয়োগ করে এ পদোন্নতি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ওই সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা টাকার ভাগ না পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় রেল বিভাগের টেবিলের গ্লাস ভাঙচুরসহ এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে। লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় পার্সোনাল অফিসার (ডিপিও) রবিউল ইসলাম বলেন, বিধিসম্মতভাবে এ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি অফিস ভাঙচুর ও কর্মকর্তা লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে  পদোন্নতি কমিটির আহ্বায়ক ও লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ট্রাফিক সুপারিনটেন্ডেন্ট (ডিটিএস) মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অডিটে এসেছে, তাই আমি কথা বলতে পারছি না।

সর্বশেষ খবর