বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আগ্নেয়াস্ত্রসহ দুই আসামি অধরা

আলী আজম

আগ্নেয়াস্ত্রসহ দুই আসামি অধরা

বহুল আলোচিত ইতালির নাগরিক তাভেলা সিজার হত্যার এক বছর পার হলেও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রসহ দুই আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আবদুল মতিনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হলেও এম এ কাইয়ুমসহ দুজন অধরা। ঘটনার পর দুটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হলেও চার্জশিটভুক্ত আসামিদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে ব্যালাস্টিক (আগ্নেয়াস্ত্রের রাসায়নিক পরীক্ষা) রিপোর্ট মেলেনি। তাভেলার শরীর থেকে ৭  দশমিক ৬৫ এমএম পিস্তলের একটি গুলি উদ্ধার করা হয়। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে চার আসামি তাভেলাকে হত্যা করতে দুটি নাইন এমএম পিস্তল ব্যবহার করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন। তবে তাভেলার শরীর থেকে বের করা গুলির ব্যালাস্টিক রিপোর্টে ওই দুই আগ্নেয়াস্ত্রের কোনো মিল পাওয়া যায়নি। সিআইডির আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যালাস্টিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাভেলার শরীর থেকে উদ্ধার করা গুলি ওই আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ‘ফায়ার’ করা হয়নি। সিআইডি সূত্র বলছে, ২৪ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে সিআইডির পরিদর্শক ও ব্যালাস্টিক বিশারদ মিজানুর রহমান আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও গুলির খোসার রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট দাখিল করেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) কর্তৃক সরবরাহকৃত ইউএসএর তৈরি দুটি ৭ দশমিক ৬৫ ক্ষমতার অটোমেটিক পিস্তল, তিনটি গুলির খোসা (কার্তুজ) ও একটি ৭ দশমিক ৬৫ ক্ষমতার ফায়ারড গুলির ব্যালাস্টিক রিপোর্ট তৈরি করা হয়। এতে বলা হয়, তিনটি গুলির খোসার সঙ্গে দুই আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ব্যবহারের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। ব্যবহৃত (ফায়ারড) গুলিটি (তাভেলার শরীর থেকে উদ্ধার করা) তুলনামূলক পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করে পরস্পরের মধ্যে মিল পাওয়া যায়নি। এসব পরীক্ষা করে মতামত দেওয়া হচ্ছে যে, তিনটি ফায়ারড কার্তুজ (খোসা) ও একটি বুলেট ওই দুই আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ফায়ার করা হয়নি। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক এম এ কাইয়ুম কমিশনার, তার ভাই আবদুল মতিন, তামজিদ আহমেদ ওরফে রুবেল ওরফে শুটার রুবেল, রাসেল চৌধুরী ওরফে চাকতি রাসেল, মিনহাজুল আরেফিন রাসেল ওরফে ভাগনে রাসেল, শাখাওয়াত হোসেন ওরফে শরিফ ও সোহেল ওরফে ভাঙ্গারি সোহেল। এই আসামিদের মধ্যে তামজিদ, রাসেল চৌধুরী, মিনহাজুল ও শাখাওয়াত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ডিবির ডিসি (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম বলেন, দুটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করার পর সেগুলো ব্যালাস্টিক রিপোর্টের জন্য সিআইডির কাছে পাঠানো হয়। সেই অস্ত্র দুুটি তাভেলা হত্যায় ব্যবহৃত হয়নি বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। ঘাতকরা তাভেলাকে খুন করতে ওই দুই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেনি। তবে ঘাতকরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে যে তারা তাভেলাকে খুন করেছে। কিলিং মিশনে ব্যবহার করা মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান-২ নম্বরের ৯০ নম্বর সড়কের গভর্নর হাউসের সীমানাপ্রাচীরের বাইরের ফুটপাথে তাভেলা সিজারকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

সর্বশেষ খবর