শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদে মদদদাতাদের বিচার হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জঙ্গিবাদে মদদদাতাদের বিচার হবে : প্রধানমন্ত্রী

আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় মেরিল্যান্ডে রিটেন্স কার্লটন হোটেলে বুধবার শেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী —সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে, টাকা ও সমর্থন দিয়ে জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে তাদের বিচার হবে। যারা পেট্রলবোমা মেরে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে তাদেরও একই পরিণতি হবে। জঙ্গিবাদ দমনে তার সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় ২৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, চিহ্নিত একটি মহল বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি সহ্য করতে পারছে না। তারাই নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের অপপ্রচারে যাতে আন্তর্জাতিক মহল বিভ্রান্ত না হয় সে জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত সব প্রবাসীকে সোচ্চার থাকতে হবে।  রিজ কার্লটন হোটেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে দাবি করে খালেদা জিয়া বার বার বিদেশিদের কাছে দেশের বিরুদ্ধে নালিশ করছেন। এগুলো রাজনৈতিক মামলা নয়, মানুষ পোড়ানোর মামলা। দোষী ব্যক্তিদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। খবর এনআরবি নিউজের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ সেপ্টেম্বর ৭০ বছরে পা রাখেন। শেখ হাসিনা নিজের ৭০তম জন্মদিনটি কাটিয়েছেন ভার্জিনিয়ায় তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসায়। ওইদিন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনের কেক কাটা ও অন্যান্য অনুষ্ঠান বাতিল করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসার আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কবি সৈয়দ শামসুল হককে দেখতে যাওয়ার কথা স্মরণ করে বলেন, তার সঙ্গে যখন কথা বলি, আমার মনে হয়নি যে তিনি চলে যাবেন। তার এত মনের জোর ছিল। তিনি বলেন, আমরা জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করব ২০২০ সালে। আমি ভাবছিলাম তাকে দিয়েই আমরা এই কমিটিটা করতে চাই। কিন্তু তিনি অসুস্থ হওয়ার কারণে আর কমিটি ঘোষণা করতে পারিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির লালন ও বিকাশে আজীবন সোচ্চার থাকা সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে গোটা জাতির সঙ্গে তিনি ব্যথিত। জাঁকজমকপূর্ণ কোনো আয়োজন না করেই নিজের জন্মদিন পালন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অন্যের কল্যাণে স্বার্থত্যাগের বিষয়টি বাল্যকালেই তিনি তার মরহুম পিতা-মাতার কাছ থেকে শিখেছিলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যখন ওই সময়ে খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য সংগ্রাম চালাচ্ছে তখন তার পরিবারের সদস্যরা কখনই জাঁকজমকভাবে জন্মদিন পালন করেনি। শেখ হাসিনা বলেন, জন্মদিন উদযাপনের জন্য কেক কাটা আমার পছন্দ নয়। দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত জনগণের মুখে হাসি ফোটাতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।  প্রধানমন্ত্রী সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সহিংস চরমপন্থার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বাংলাদেশিকে জীবন দিতে হয়েছে। এখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়। সব জায়গায়ই সন্ত্রাসবাদ থাবা দিচ্ছে। এ জন্য আরও সজাগ থাকতে হবে। দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে কাজ করতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বর্তমান সরকারের সময়ে দেশে বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের চিত্র প্রবাসীদের সামনে উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের আরও বেশি করে দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত হতে হবে। বাংলাদেশের সাফল্যের তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস, স্টেট ডিপার্টমেন্টসহ আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে তুলে ধরতে সব প্রবাসীকে রাষ্ট্রদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া সেনা আইন ও সংবিধান লংঘন করেছেন। যে দল অবৈধভাবে গঠিত হয়েছে, সেই দল জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। জিয়ার পুত্র (তারেক) অর্থ পাচারকারী, যা এফবিআইর তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা কখনো অসৎ পথে যাইনি। আমরা আমাদের নিজেদের ভাগ্য গড়ার চিন্তা করছি না। আমাদের চিন্তা কীভাবে জনগণের কল্যাণ হবে।

 

সর্বশেষ খবর