শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সিলেট থেকে নতুন করে প্রচারণা শুরু করছে জাতীয় পার্টি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের সব নির্বাচনী আসনে প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নামছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আজ ১ অক্টোবর সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর দরগাহ জিয়ারত করে ‘নতুন মিশনের’ যাত্রা শুরু করবেন তিনি। একই দিন সিলেটে জাতীয় পার্টি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যও রাখবেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। এরশাদের এ সফর ঘিরে সিলেট জাপায় এখন সাজ সাজ রব। দলীয় প্রধানের সফরকে সফল করতে দলটির নেতা-কর্মীরাও ব্যাপক তত্পর। সূত্রমতে, দুটি লক্ষ্য সামনে রেখে পথ চলছে জাতীয় পার্টি। ওই দুই লক্ষ্য হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবকটি আসনে প্রার্থী দেওয়া এবং সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী ও গতিশীল করা।

জানতে  চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে দলকে শক্তিশালী করার জন্য আজ হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করে মাঠে নামছি। পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ এবং বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ দলের সব পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে এ যাত্রা শুরু করছেন।’ তিনি বলেন, ‘আশা করছি পার্টির চেয়ারম্যান আগামী নির্বাচনের আগেই ৩০০ আসনের প্রার্থী যাচাই-বাছাই করবেন।’ সমাবেশ সম্পর্কে জাপার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজ রহমান বলেন, পার্টির চেয়ারম্যানের এ সফর সফল করতে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ব্যাপক তত্পর। দলীয় প্রধানের আগমন ঘিরে উজ্জীবিত নেতা-কর্মীরা রেজিস্টারি মাঠের সমাবেশে জনতার ঢল নামাবে। এ জন্য প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে রেজিস্টারি মাঠে এরশাদের জন্য বিশালাকার মঞ্চ তৈরি হয়েছে। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ করা গেছে। তিনি বলেন, আজ হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত এবং সমাবেশের মধ্য দিয়ে দেশের ৩০০ আসনে পার্টির চেয়ারম্যান এককভাবে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন, এমনটাই নেতা-কর্মীরা আশা করছেন। জানা যায়, আজ থেকে জাতীয় পার্টির নতুন মিশন শুরু হচ্ছে। সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে পার্টি চেয়ারম্যানের। সফর সফল করতে সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে পার্টির সব ইউনিট দিনরাত কাজ করছে। সফরে পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও থাকবেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা ছাড়ার পরও সিলেট ছিল জাতীয় পার্টির দুর্গ। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছাড়ার পরপরই ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ বিভাগে আটটি আসনে জয়ী হয় জাতীয় পার্টি। ওই নির্বাচনে রংপুরের পর সিলেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পায় পার্টি। এমন ফলাফলের পর এরশাদ সিলেটকে তার দ্বিতীয় বাড়ি বলে ঘোষণা দেন। এখানে বাড়ি নির্মাণের জন্য জমিও ঠিক করেন। পরবর্তী সময়ে ২০০১ সালের নির্বাচনে সিলেটে দলের কোনো প্রার্থী জয়ী না হলেও ভোটের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে ছিল জাতীয় পার্টি। বর্তমানে বিভাগের চারটি আসন রয়েছে জাতীয় পার্টির দখলে। নেতা-কর্মীরা জানান, পার্টির পুরনো ভোটব্যাংক এখনো অক্ষত। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানসহ নেতা-কর্মীরা সিলেটে দলের সেই পুরনো অতীত ফিরে পেতে চান। সে জন্য সিলেট থেকেই প্রচারণা শুরু করছে জাতীয় পার্টি।

সর্বশেষ খবর