বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
এনএসডিসি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

অনেকেই জানতে চান এত উন্নয়নের ম্যাজিকটা কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশের উন্নতিতে বিশ্বের অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনারা উন্নয়নটা করলেন কীভাবে? কেউ কেউ বলেন ম্যাজিকটা কী? এরকম নানা প্রশ্ন আমাকে তারা করেন, আমি শুনি।’ গতকাল সকালে তেজগাঁও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের (এনএসডিসি) চতুর্থ বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ম্যাজিক একটাই। সেটা হলো, দেশকে ভালোবাসা। দেশের মানুষকে ভালোবাসা। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা কোনো ভোগের বা নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের বিষয় নয়। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানোই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করায় আমরা সফলতা পাচ্ছি।’

 

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জনগণকে কতটুকু দিতে পারছি, দেশের কতটুকু উন্নয়ন করতে পারছি এবং দেশকে কতটুকু মর্যাদার আসনে নিয়ে যেতে পারছি, এটাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য (এসডিজি) পূরণে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটা কাজেই দক্ষতা প্রয়োজন। কাজেই এ দক্ষতা উন্নয়নের যে লক্ষ্য, সেটা আমাদের সুনির্দিষ্ট করতে হবে কীভাবে কর্মক্ষেত্রে আরও বেশি দক্ষতা অর্জন করা যায়। আর এটা করতে মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষকে সুশিক্ষিত করে এমনভাবে তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে, যাতে প্রত্যেকটা কাজ সুষ্ঠুভাবে করা যায়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চলার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, বিদেশে আমরা এখন দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে চাই। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমেই আমাদের আন্তর্জাতিক বিশ্বে এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় এবং দফতরকে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লক্ষ্য অর্জন করতে হলে কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। এমডিজি (সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা) অর্জনে বর্তমান সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সাফল্য আন্তর্জাতিক বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অঙ্গীকার করেছিলাম, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব। ইতিমধ্যে আমরা অনেক অর্জন করেছি। বিশ্ব মন্দার সময় আমরা সরকার গঠন করলেও আমরা এখন যথেষ্ট অগ্রগতি করতে সক্ষম হয়েছি। সারা বিশ্ব বাংলাদেশের প্রশংসা করে। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রবাসীকল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি এবং শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু অংশগ্রহণ করেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার বৈঠকে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন।

দশ টাকার চাল বিতরণে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা : এদিকে প্রধানমন্ত্রী গতকাল জাতীয় সংসদে অসচ্ছল ও হতদরিদ্রদের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, যতদিন প্রয়োজন ১০ টাকা মূল্যের এই চাল বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ১০ টাকার চাল বিতরণে কোনো অনিয়ম হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় সদস্য মীর শওকাত আলী বাদশার এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, এই চাল বিতরণে প্রতি ৫০০ জনের জন্য একজন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। ডিলার এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা হতদরিদ্রদের তালিকা করে সেই অনুযায়ী চাল বিতরণ করবে। এই তালিকা প্রস্তুতকালে কোনো গরমিল বা অনিয়ম যেন না থাকে সংসদ সদস্যরা সেই তালিকা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। সরকারি কর্মকর্তারাও যেন পরীক্ষা করে দেখেন। যদি কেউ তালিকায় অনিয়ম করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিলারদের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাদের প্রয়োজন তাদের নাম না থেকে যদি সচ্ছল কারও নাম থাকে তাহলে ওই সচ্ছলদের নাম বাতিল হবে এবং অসচ্ছলদের নাম দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর