বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে ছাত্রলীগ নেতা রবিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আফসানা ফেরদৌসের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান রবিন এখনো পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। আফসানা মিরপুরের সাইক ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ২ অক্টোবর পুলিশ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়েছে। প্রতিবেদনে আফসানা আত্মহত্যা করেছেন এমনটি উল্লেখ আছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাফিজ। এর আগে গত ২৭ আগস্ট এ ঘটনায় চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন— রবিনের বাবা আবদুল হাই, মশিউর রহমান মূসা, সিফাতুল ইসলাম সিফাত ও আশিকুর রহমান ভূঁইয়া। সূত্র জানায়, আফসানার মৃত্যু নিয়ে আন্দোলন শুরুর পরপরই ছাত্রলীগের তেজগাঁও কলেজের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিন ভারতে চলে যান। আফসানার লাশ উদ্ধারের পর আল হেলাল হাসপাতালের সিসি টিভির ফুটেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কয়েকজনকে শনাক্ত করে পুলিশ। এর মধ্যে রবিনের চেহারাও পাওয়া যায় বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তারা।   জানতে চাইলে মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আহমেদ বলেন, আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখেছি, আফসানা আত্মহত্যা করেছে। তবে এর পেছনে কারও কোনো প্ররোচনা ছিল কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে কারও সম্পৃক্ততা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  গত ১৩ আগস্ট রাজধানীর কাফরুলের আল হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতাল থেকে প্রাথমিকভাবে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করেন কাফরুল থানার এসআই ফজলুল হক। তাত্ক্ষণিকভাবে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। আর সেই অজ্ঞাত নারীই আফসানা ফেরদৌস বলে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়াতে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আফসানাকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আফসানার মৃত্যুর ঘটনার পর রাতে অপরিচিত এক মোবাইল থেকে তার মাকে জানানো হয় আফসানার লাশ ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে। এরপর আফসানার মা ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকার আত্মীয়স্বজনদের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে আফসানার মামা ও অন্যরা বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখেন সেখানে লাশ নেই। আবারও অপরিচিত মোবাইল থেকে জানানো হয় আফসানার লাশ কাফরুলের আল হেলাল হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন একটি লাশ কাফরুল থানায় আছে। এরপর কাফরুল থানায় আফসানার ছবি দেখানো হলে থানার ডিউটিরত পুলিশ সদস্যরা জানান এই লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে আছে। সেদিনই রাত ৩টায় ঢাকা মেডিকেল মর্গে আফসানার লাশ শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। ময়নাতদন্ত শেষে আফসানার লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। পুলিশ জানায়, আল হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতালে দুজন যুবক সিএনজিতে করে আফসানার লাশ জরুরি বিভাগের স্ট্রেচারে রেখে পালিয়ে যায়। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাফরুল থানায় খবর দেয়। পরে থানার এসআই ফজলুল হক লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মো. শফিউজ্জামান।

সর্বশেষ খবর