রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

চায়ের আবাদে যুক্ত হলো দিনাজপুর

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

চায়ের আবাদে যুক্ত হলো দিনাজপুর

উত্তর জনপদের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারীর পর এবার দিনাজপুরেও চা আবাদ শুরু হয়েছে। এমনকি এরই মধ্যে এ উদ্যোগে সাফল্যও এসেছে। এতে তৈরি হয়েছে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, দিনাজপুরের অবস্থান হিমালয়ের পাদদেশে হওয়ায় এ এলাকায় চা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। দিনাজপুরে চা চাষ করে যে উৎপাদন হচ্ছে তা অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট অবদানও রাখছে। বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলের পর সমতলে চা চাষের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনাজপুরের বীরগঞ্জের পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ঝলঝলি গ্রামের নজরুল ইসলামের এক একর জমিতে এবং পাল্টাপুর ইউনিয়নের পাল্টাপুর গ্রামের আশ্রায়ণ কেন্দ্র এলাকায় এক একর জমিতে চা চাষ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, চায়ের চারা রোপণের পর পরিচর্যা ছাড়া তেমন খরচ নেই। নজরুল ইসলাম তার জমি প্রস্তুত করে চারা রোপণে খরচ করেছেন ৬০ হাজার টাকা। গত বছরের আগস্টে চারা রোপণ করে এরই মধ্যে চারবার পাতা তুলে ২৫-২৬ টাকা কেজি দরে প্রায় ২৪ হাজার টাকার চা পাতা বিক্রি করেছেন। গাছের বয়স দুই বছর হওয়ার পর প্রতি মাসে কমপক্ষে ২৫ হাজার টাকার চা পাতা বিক্রি করা যাবে বলে তিনি জানান। কথা হয় পলাশবাড়ী ঝলঝলি বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, পঞ্চগড়ের সাকোয়ার চা চারা বিক্রেতা নার্সারি শরিফের পরামর্শে এবং চা বাগান করার নিজ আগ্রহে তিনি কাজ শুরু করেন। সমিতির সহযোগিতায় গত বছরের আগস্টে চা চারা রোপণ করেন। এরই মধ্যে চারবার চা পাতা সংগ্রহ করে পঞ্চগড় নর্থ বেঙ্গল চা কারখানায় বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, গাছের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চা পাতা সংগ্রহের পরিমাণও বাড়বে। প্রতি মাসেই চা পাতা বিক্রি করা যাবে। গাছের বয়স দুই বছর হওয়ার পর প্রতি মাসে কমপক্ষে ২৫ হাজার টাকার চা পাতা বিক্রি করা যাবে। নজরুল ইসলাম আরও জানান, চা চাষের উপযোগী এ মাটিতে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে এজন্য তিনি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছেন। প্রচণ্ড রোদে ছায়া দিতে চা গাছের ফাঁকে ফাঁকে নিম গাছ লাগিয়েছেন। খরার সময় পাইপের সাহায্যে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করেছেন। বছরে দুবার সার ব্যবহার করলেই চলে। তিনি জৈব সার বেশি ব্যবহার করছেন। বীরগঞ্জ কৃষি অফিসের উপসহকারী শাহজাহান আলী জানান, হিমালয়ের পাদদেশে দিনাজপুরের অবস্থান হওয়ায় এ এলাকায় চা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত। চা গাছ নিবিড় পরিচর্যা, পরিমিত পানি সেচ দিতে এবং যত্নবান হতে হবে। এ অঞ্চলে দুজন চা চাষে এগিয়ে এসেছেন। এটা লাভজনক হওয়ায় দিন দিন চা চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।

সর্বশেষ খবর