রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চলতি সপ্তাহেই খাদিজা হত্যা চেষ্টা মামলার চার্জশিট

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

চলতি সপ্তাহেই খাদিজা হত্যা চেষ্টা মামলার চার্জশিট

সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানোর অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ইতিমধ্যে হামলার বিভিন্ন আলামত ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। তদন্তের বাকি কাজ শেষ করে চলতি সপ্তাহেই আলোচিত এই মামলাটির চার্জশিট আদালতে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং সিলেট মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সূত্র জানায়, এমসি কলেজের ভিতর খাদিজার ওপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের হামলার ভিডিওচিত্রটি সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এ ছাড়া হামলায় ব্যবহূত চাপাতি, ঘটনাস্থলের রক্তমাখা বালি, ঘাস, খাদিজার রক্তমাখা কাপড়সহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।

পুলিশ হামলাকারী বদরুলকে আটকে সহযোগিতাকারী এমসি কলেজ ছাত্র জুনেদ আহমদ ও খাদিজাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ইমরান কবীরসহ বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নিয়েছে।  তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার এসআই হারুনুর রশীদ জানান, এখন পর্যন্ত ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মেডিকেল প্রতিবেদন এসে পৌঁছেছে। মেডিকেল প্রতিবেদন চেয়ে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে স্কয়ারের প্রতিবেদনের জন্য বেশি দিন অপেক্ষা করা হবে না। স্কয়ারের প্রতিবেদন আসতে দেরি হলে ওই প্রতিবেদন ছাড়াই আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে। এতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলেও জানান তদন্ত কর্মকর্তা। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা জানান, খাদিজার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা  মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে। মামলার প্রয়োজনীয় প্রমাণ ও সাক্ষ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই মামলাটির চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া সম্ভব হবে। এদিকে হামলার ঘটনার পর সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীরা আন্দোলনে নামে। চার দফা দাবিতে তারা তিন দিনের কর্মসূচি পালন করে। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ১৬ সেপ্টেম্বরের (আজ) মধ্যে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর। এ দাবিতে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপিও দিয়েছে। প্রসঙ্গত, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ৩ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর সিলেট এমসি কলেজের পুকুরপাড়ে সিলেট সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসের ওপর হামলা চালায় বদরুল। তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অবস্থার অবনতি হলে পরদিন ভোরে তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরপরই এমসি কলেজের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় পুলিশ বদরুলকে আটক করে। হামলার ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেন। বদরুল হামলার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খাদিজার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। খাদিজা মাঝেমধ্যে চোখ মেলে তাকাচ্ছে এবং হাত-পা নাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার চাচা আবদুল কুদ্দুস। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর