বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

জলপাই চাষে স্বাবলম্বী মিন্টু

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ

জলপাই চাষে স্বাবলম্বী মিন্টু

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের সাগান্না গ্রামের ষাটতলাপাড়ার কৃষক আবদুল লতিফ শিকদার মিন্টু প্রথমে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জলপাই চাষ শুরু করেন। ১১ বিঘা জমিতে জলপাই চাষ করছেন। বর্তমানে তিনি জলপাই বিক্রি করে বছরে ৫-৬ লাখ টাকা আয় করছেন। জলপাই চাষ করায় এলাকার অনেক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তার বাগানের জলপাই জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, যশোর খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে। তার দেখাদেখি অধিকাংশ চাষি উদ্বুদ্ধ হয়ে জলপাই চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তিনি জলপাই চাষকে আরও সম্প্রসারণ করতে গড়ে তুলেছেন জলপাইর নার্সারি। প্রতি চারা বিক্রি করছেন ১০০ টাকা দরে। চারা থেকেও তিনি মোটা অঙ্কের টাকা আয় করছেন। তিনি এখন স্বাবলম্বী। জলপাইবাগানের মালিক আবদুল লতিফ শিকদার মিন্টু জানান, তিনি ১৯৮৮ সালে টাঙ্গাইলের মধুপুর গারো পাহাড় গ্রামে বন্ধু উত্তমকুমারের বোনের বিয়েতে বেড়াতে যান। সেখানে দেখতে পান এক চাষি আটটি গাছের জলপাই ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। তা দেখে তিনিও মনস্থির করেন জলপাই চাষে। এরপর ১৯৮৯ সালে গারো পাহাড় গ্রাম থেকে প্রথমে ৩০০ টাকা দরে ১০০ চারা ৩০ হাজার টাকায় কিনে আনেন। চারাগুলো লাগানোর পর ৬০টি মারা যায়। এতে তিনি আশাহত না হয়ে পরের বছর আরও ১৫০টি চারা কিনে আনেন। তিন বছর পর গাছে জলপাই ধরতে শুরু করে। তার আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ— এ চার মাস তিনি জলপাই বিক্রির কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন। প্রতিটি গাছ থেকে বছরে ৪-৫ মণ জলপাই পাচ্ছেন; যার বাজারমূল্য ১ হাজার টাকা মণ। বাগানে জলপাই গাছের পেছনে বছরে সেচ, সার, কীটনাশক ও লেবার খরচ হয় লক্ষাধিক টাকা। এ জলপাইবাগান দেখতে আসা স্থানীয় আবদুর রউফ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক শাহনুর আলম জানান, মিন্টু মিয়ার জলপাইবাগান এলাকার গর্ব।

তার কাছ থেকে চারা নিয়ে তিনিও জলপাই চাষ করবেন বলে জানান। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মো. মনিরুজ্জামান জানান, কৃষক মিন্টু মিয়া জলপাই চাষ ও নার্সারি করে লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের লোকেরা তাকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। জলপাই চাষ আরও যাতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আশপাশের জেলাগুলোয় সম্প্রসারণ করা যায় তার জন্য কৃষি বিভাগ চেষ্টা করবে।

সর্বশেষ খবর