বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ নেতার গুদাম ভর্তি ১০ টাকার চাল

প্রতিদিন ডেস্ক

১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে অনিয়মের নানা অভিযোগ আসছেই। হতদরিদ্রদের বদলে সচ্ছলদের মাঝে এ চাল বিতরণ ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতাদের গুদামে বস্তা বস্তা চাল লুকিয়ে রাখার ঘটনা জানা গেছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে এ চাল উদ্ধারও করেছেন।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নান্দাইল উপজেলা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল্লাহর গুদামে অভিযান চালিয়ে হতদরিদ্রদের ১০ টাকা কেজির ৪৫ বস্তা চাল জব্দ করা হয়েছে। গতকাল উপজেলার নান্দাইল ইউনিয়নের দাতারাটিয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে এসব চালের বস্তা জব্দ করেন নান্দাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তামিম আল ইয়ামিন। বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছেন, নান্দাইল ইউনিয়নের সাবেক ডিলার নুরুল্লাহ গত সেপ্টেম্বর মাসের জন্য বরাদ্দকৃত চাল হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ না করে মাস্টাররোল জমা দিয়ে দেন। সেই সঙ্গে লুকিয়ে রাখা চাল পাচারের চেষ্টা চালান।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাবিবুর রহমান দৌলতপুর উপজেলায় ১০ টাকা কেজি দরের চাল আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছেন। ফলে তিনি উপজেলায় চাল বিক্রি বন্ধ করে দুটি ইউনিয়নের দুজন ব্যবসায়ীর এজেন্সি (ডিলারশিপ) বাতিল করেছেন। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে খাদ্য গুদাম থেকে সেপ্টেম্বর মাসের চাল রিফায়েতপুর ইউনিয়নের ডিলার তরিকুল ইসলাম ও মথুরাপুর ইউনিয়নের মাসুদ রানা উত্তোলন করেন। অভিযোগ উঠে, তারা হতদরিদ্রদের মাঝে বিক্রি না করে কালোবাজারে বেশি দামে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। এ খবর জানাজানি হলে মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাবিবুর রহমান সরেজমিন দুই ইউনিয়নে তদন্তে যান। তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে চাল আত্মসাতের তথ্য-প্রমাণ পান।

মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকার চালের কার্ড প্রদানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, পাইকপাড়া ইউনিয়নে গরিবদের বাদ দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা সচ্ছল লোকদের নামে তালিকা করেছেন। তারা একজনের নামে একাধিক কার্ডও করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তানভীর আহম্মদ বলেন, এ ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কার্ড সংশোধন করা হয়েছে। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি চালের তালিকায় নাম ওঠানো হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য, তাদের আত্মীয়-স্বজনদের নাম। অভিযোগ পাওয়া গেছে, এ চাল একই পরিবোরে দুই-তিনজনের নামে এবং সরকারি চাকরিজীবী-ভিজিডি কার্ডপ্রাপ্ত-বিত্তবানদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। কচুয়া ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার বনগ্রাম, রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান নকীব ফয়সাল অহিদ বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে তালিকা প্রস্তুত করায় কিছু ভুল আছে। এগুলো সংশোধন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর