বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাহুবলে থানায় ছাত্রদের হামলা পুলিশের গুলি

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুন্নাহার পারভীনের ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিবাদে কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকরা। বিক্ষোভ শেষে মিছিল নিয়ে থানার ভিতর প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালায়। এ সময় ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। ছাত্র-শিক্ষকসহ চারজনকে আটক করে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ৯০ রাউন্ড শটগান ও ১৮ রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানার এসআই দেলোয়ার হোসেনকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদসহ থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাহুবল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুন্নাহার পারভীনের ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিবাদে বাহুবলের দীননাথ ইনস্টিটিউশন ছদরুল হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকরা বুধবার বেলা ১১টায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করে। এ সময় ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম ও বাহুবল মডেল থানার এসআই কাজী জিয়া উদ্দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। এ সময় উত্তেজিত ছাত্ররা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ওপর জুতা ছুড়ে মারে। পরিস্থিতির সামাল দেন বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হাই। তিনি উপস্থিত হয়ে সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিলে ছাত্ররা স্কুলে ফিরে যাওয়ার পথে বাহুবল থানার সামনে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে থানার ভিতরে ঢুকে হামলা চালিয়ে থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করতে রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় ১৪ ছাত্র গুলিবিদ্ধ, তিন পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুই শিক্ষক, এক ছাত্রসহ অভিভাবকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত দুই শিক্ষক হলেন দ্বীননাথ হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক অশোক দাস ও গোলাম মহিউদ্দিন, দশম শ্রেণির ছাত্র জাহাঙ্গীর। অন্যজন অভিভাবক। বেলা ৩টার দিকে আটক চারজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান থানার ওসি মোল্লা মনির হোসেন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম, পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার এই ঘটনা তদন্তের জন্য সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুদিপ্ত রায়কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ৯০ রাউন্ড শটগানের গুলি ও ১০ রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে। আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর