বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতির পদ ফেরত চান এমপিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতির পদে বসতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন সংসদ সদস্যরা। তারা সভাপতির পদটি ফেরত চাইছেন। এ অবস্থায় তাদের পক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে যাচ্ছে। গতকাল সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এমপিরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে থাকতে পারবেন না বলে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন, মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে আপিল করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, গত ১ জুন হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্যরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতির পদে থাকতে পারবেন না। এ নিয়ে সংসদের বাজেট ও তার পরের অধিবেশনে তারা ব্যাপক হইচই করেন। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সদস্যরা জানতে চান, সংসদ সদস্যরা যাতে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদ গ্রহণ করতে পারেন, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? জবাবে সচিব সোহরাব হোসেইন জানান, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এরপর কমিটির সভাপতি আফছারুল আমিন বলেন, যেহেতু মন্ত্রণালয় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশের বাইরে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ নেই। কমিটির সদস্য হাছান মাহমুদ জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতির পদ ফিরে পাওয়ার দাবিটি সব সংসদ সদস্যের। যে কারণে কমিটি মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছিল। সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

বরাদ্দের টাকা জমা হয়নি : বৈঠকে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষকদের জমা হওয়া অবসর ভাতার আবেদন নিষ্পত্তির জন্য ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দরকার। অনেক দেন-দরবারের পর চলতি অর্থবছরে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ কোটি টাকা সিড মানি হিসেবে জমা থাকবে এবং বাকি টাকা দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর ভাতা বাবদ পরিশোধ করা যাবে। তবে বরাদ্দ হওয়া টাকা এখনো তহবিলে জমা হয়নি।

এমপিওভুক্তির নির্দেশিকা চূড়ান্ত পর্যায়ে : সংসদীয় কমিটি শিক্ষকদের দ্রুত অবসর-সুবিধা দেওয়ার জন্য শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যমান আইন দ্রুত সংশোধন করে তাদের ফান্ডে জমা থাকা টাকা থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রতি মাসে এ খাতে দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

 মন্ত্রণালয় জানায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য একটি নির্দেশিকা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। তবে অর্থ বরাদ্দ না করলে নতুন করে এমপিওভুক্ত করা যাবে না।

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৯৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন প্রকল্পের আওতায় ২৩ হাজার ৩৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি সামগ্রী বিতরণ করেছে। ৬ হাজার ৫০৬টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষসহ ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৩১ হাজার ৩৪০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরি করে ৫ লাখ ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

আফছারুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য আবদুল কুদ্দুস, হাছান মাহমুদ, গোলাম  মোস্তফা, এস এম আবুল কালাম আজাদ, মামুনুর রশিদ, সেলিনা আক্তার বানু প্রমুখ অংশ নেন।

সর্বশেষ খবর