শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

১০ টাকা কেজি চালের কার্ডে তেলেসমাতি

প্রতিদিন ডেস্ক

সরকারের গরিব ও হতদরিদ্রবান্ধব ১০ কেজি দরের চাল নিয়ে আরও অভিযোগ এসেছে। জানা গেছে, চাল বিতরণের রেশন কার্ড নিয়ে প্রভাবশালীসহ চেয়ারম্যান-মেম্বাররা নানা কৌশল অবলম্বন করে ফায়দা লুটছেন। এতে একদিকে হতদরিদ্ররা বঞ্চিত হচ্ছেন, আরেকদিকে মহতী কর্মসূচিটিই মুখ থুবড়ে পড়ছে।

এক পরিবারের সাতজনই হতদরিদ্র : ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়া ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজি দরে চাল পাওয়ার কার্ড পেয়েছেন প্রভাবশালী একই পরিবারের সাতজন। এরা হলেন হারুনুর রশিদ (কার্ড নম্বর ৫০০), শিরিনা আক্তার (কার্ড নম্বর ৫০১), জসনা বেগম (কার্ড নম্বর ৫০২), হাচনা বেগম (কার্ড নম্বর ৫০৩), আইনউদ্দিন (কার্ড নম্বর ৫০৪), আবু হানিফ (কার্ড নম্বর ৫০৫), হাসিবুল (কার্ড নম্বর ৫০৬)। এ ছাড়াও এ ইউনিয়নে কোনো কোনো ব্যক্তি একাই দুটি কার্ড পেয়েছেন। কার্ড পাওয়াদের মধ্যে আরও আছেন সচ্ছল আওয়ামী লীগ নেতারা পর্যন্ত। বাদ যাননি চেয়ারম্যান-মেম্বার পরিবারের লোকজনও। যেমন কার্ড পেয়েছেন বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের চাচি গোলাপি বেগম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জবায়দুর রহমান, তার স্ত্রী সাহনাজ পারভীন প্রমুখ। আবার কোথাও কোথাও চালের কার্ড বিক্রিও করা হয়েছে।

পাচারের সময় চাল আটক : শেরপুর প্রতিনিধি জানান, পাচারের সময় নালিতাবাড়ীতে ১০ টাকা কেজি দরের ২৩ বস্তা চালসহ ট্রলিচালককে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা। গতকাল দুপুরে উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের শিমুলতলা পল্লী বিদ্যুৎ সেন্টার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া-মণ্ডলিয়াপাড়া ইউনিয়নের কালাকুমা এলাকা থেকে এ চাল ট্রলিযোগে নালিতাবাড়ী শহরে আনা হচ্ছিল। পথিমধ্যে শিমুলতলায় স্থানীয় ধান ব্যবসায়ী ও বাঘবেড় ইউপির সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ট্রলি থামাতে বলেন।

বন্ধ হয়ে গেল বিতরণ : ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, সদর উপজেলার ভাবখালী ইউনিয়নে মজিবুর নামে সাবেক এক ডিলারের কারসাজিতে ১০ টাকা কেজি দরের চাল পাচ্ছেন না হতদরিদ্ররা। ওই এলাকার বর্তমান দুই ডিলারের ভাষ্য, কার্ডধারী দরিদ্রদের টিপসই জাল করে সাবেক ডিলার মজিবুর নানা কারসাজি করেছেন। এ নিয়ে লোকজনের অভিযোগের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চাল বিতরণ।

চেয়ারম্যানরাই ডিলার : ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, সরাইলে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ ২১ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছেন। জানা গেছে, সচ্ছল ও বিত্তশালী পরিবারের সদস্য ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা রেশন কার্ড পেয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া একাধিক ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নিজেই কৌশলে ডিলার হয়েছেন। ফলে চাল দেওয়ার ভুয়া কার্ডের ছড়াছড়ি ঘটেছে। একেকজন জনপ্রতিনিধির হাতে রয়েছে ২০-৩০টি করে কার্ড। এক আঙ্গুলের টিপসইতে হচ্ছে মাস্টার রোল।

সর্বশেষ খবর