সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

‘নেত্রী আমাদের ছেড়ে যাবেন না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

নেত্রী আমাদের ছেড়ে যাবেন না। আমরা আপনার নেতৃত্বে রাজনীতি করতে চাই। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন। জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। জীবনের মায়া ছেড়ে রাজনীতি করেছেন। ছোট ছোট সন্তানদের বিদেশে রেখে দেশ ও জনগণের জন্য দেশে রয়েছেন। তিল তিল করে দলকে শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করেছেন। এখন আমাদের ছেড়ে কোথায় যাবেন। আওয়ামী লীগে আপনি ছাড়া অন্য কারও নেতৃত্ব চাই না। এভাবেই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি নিজেদের অনুভূতি তুলে ধরলেন জেলা নেতারা। এ ছাড়াও সজীব ওয়াজেদ জয়কে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনার দাবিও জানান তারা। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তারা বলেন, জয় শুধু আপনার ছেলে নন, তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর নাতি নন, বাংলাদেশের সম্পদ। তার যোগ্যতা অনুসারে আওয়ামী লীগের সম্মানজনক পদে আনবেন। নেত্রী আপনার পাশে জয়কে দেখতে চাই। আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে প্রতিটি সাংগঠনিক জেলায় জয়কে সফর করার আহ্বান জানান তারা।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে গতকাল আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিলের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে জেলা নেতারা বক্তব্য রাখেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর ১২টার দিকে কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত হন সজীব ওয়াজেদ জয়।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন, নেত্রী আমাদের ছেড়ে কোথায় যাবেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে দেশের মানুষ আপনার নেতৃত্ব চায়। যে দলের জন্য জেল-জুলুম এবং নির্যাতন সহ্য করেছেন। দলকে তিল তিল করে সুসংগঠিত করেছেন সেই দলকে ছেড়ে যাবেন না। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, প্রধানমন্ত্রী যত দিন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন ততদিন আমরা আপনার নেতৃত্বের ছায়াতলে থাকতে চাই। পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম হাওলাদার বলেন, আওয়ামী লীগের আগামী কেন্দ্রীয় কমিটিতে জয়কে নেতৃত্বে আনা প্রয়োজন। আমরা প্রত্যাশা করি, জয়কে সম্মানজনক পদে আনা হবে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সজীব ওয়াজেদ জয়কে জেলা সফরে দেখতে চাই। মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন বলেন, পরবর্তী নির্বাচনে জয়কে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমতউল্লাহ কাউন্সিলরদের উদ্দেশে বলেন, একজন আরেকজনকে সাইজ করার চিন্তা করবেন না। নৌকা ছাড়া নির্বাচন করলে একজনেরও জামানত থাকবে না। কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান বলেন, দলকে আরও শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করতে নেত্রী আপনার বিকল্প নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আল মামুন সরকার বলেন, নেত্রী পঁচাত্তরের পরে যারা আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন তাদের মূল্যায়ন করবেন। চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মইন পাটওয়ারী দলে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা দলে কর্মীবান্ধব নেতা দেখতে চাই। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আগামী দিনের রাজনৈতিক পথ চলতে শেখ হাসিনাকে পুনরায় আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দেখতে চাই। বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান টুকু বলেন, সোনার বাংলা গড়তে সজীব ওয়াজেদ জয়কে আগামী রাজনীতিতে দেখতে চাই। মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পংকজ কুমার কুণ্ডু বলেন, মাগুরায় রেললাইন প্রয়োজন। তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী রসিকতা করে বলেন, রেল লাইনের দরকার কি। রেল লাইন ঝম ঝম, পা পিছলে আলুর দম। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সদর উদ্দিন খান বলেন, দেশের উন্নয়নে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের দলে দেখতে চাই। মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হালিম বলেন, আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে জনপ্রিয় নেতাদের দলে টানতে হবে। এ ছাড়াও কাউন্সিলে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনসুর আহমেদ, লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ শামসুল আলম হিরু, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিনসহ ৪১ জন জেলা নেতা বক্তব্য রাখেন।

সর্বশেষ খবর