বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
ঢাকা-দিল্লি যৌথ প্রয়াস

সন্ত্রাসবাদবিরোধী আঞ্চলিক সম্মেলনের উদ্যোগ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা এবং মৌলবাদীদের বাড়াবাড়ি ঠেকাতে যৌথভাবে আঞ্চলিক সম্মেলনের আয়োজন করতে পারে ভারত-বাংলাদেশ। সম্প্রতি গোয়ায় ব্রিকস ও বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেই এ বিষয়টির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোও এ সম্মেলনে যোগ দিতে পারে।  যদিও সন্ত্রাসবাদীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ যার বিরুদ্ধে উঠেছে সেই পাকিস্তানের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সম্প্রতি সন্ত্রাসবাদীদের মদদ দেওয়া এবং সার্ক সম্মেলনের উপযুক্ত পরিবেশ নেই— এ অভিযোগ তুলে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপসহ সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলো ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন বয়কট করে। গোয়ায় বিমসটেক সম্মেলনে শেখ হাসিনাও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিমসটেক গোষ্ঠীভুক্ত শীর্ষ নেতাদের কাছে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে পরাস্ত করতে তাদের মদদদাতা, পরামর্শদাতা, অর্থ ও অস্ত্র জোগানকারীদের খুঁজে বের করার আরজিও জানান শেখ হাসিনা। সন্ত্রাস দমনে শেখ হাসিনার কার্যকর ভূমিকা এটাই প্রথম নয়। ২০০৯ সালে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ফিরে এসে সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রণী ভূমিকার পরই ধীরে ধীরে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মজবুত হতে থাকে। দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই ভারতের একাধিক মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিকে প্রতিবেশীর হাতে তুলে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সবশেষে ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে দুই দেশ আরও কাছাকাছি আসে। সন্ত্রাসবাদ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ায় সম্প্রতি গোয়ায় ব্রিকস ও বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকেও শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদি। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে পাকিস্তান ক্রমাগত হস্তক্ষেপ করায় ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন বয়কটের পথে হাঁটে বাংলাদেশ। পাশাপাশি গত মাসের শেষে কাশ্মীরের উরিতে জঙ্গি হামলায় ১৯ জওয়ানের নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারতের পাশে থেকে বাংলাদেশ জানায় এই কঠিন সময়ে প্রতিবেশী দেশের পাশেই রয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, ২৯ সেপ্টেম্বর এলওসি পেরিয়ে পাক শাসিত কাশ্মীরে গিয়ে ভারতীয় সেনার ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর পরই বিদেশি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশই প্রথম এই সেনা অভিযানকে সমর্থন জানায়। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় কানেকটিভিটি বৃদ্ধি ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ ক্রমে ভারতের এক নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে উঠে আসছে। বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্ক এতটাই গভীর যে, আগামী বছর ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করার কথাও ভাবছে নয়া দিল্লি। প্রতি বছরই রাজধানী দিল্লিতে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজে উপস্থিত থাকেন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সের মতো বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর প্রেসিডেন্টরা বিভিন্ন সময় প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হয়ে উপস্থিত থেকেছেন। এবার সেখানে দেখা যেতে পারে পদ্মাপাড়ের দেশটির সরকারপ্রধানকে। সূত্রে খবর, ২০১৭ সালের ওই অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের সম্ভাব্য নামের তালিকায় একেবারে প্রথম দিকেই আছেন শেখ হাসিনা।

সর্বশেষ খবর