মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
বাড়বে বাঘের প্রজনন

সুন্দরবনে হচ্ছে ১৮ অভয়ারণ্য

মোস্তফা কাজল

সুন্দরবনে হচ্ছে ১৮ অভয়ারণ্য

বংশবৃদ্ধি এবং বাঘ বাঁচাতে সুন্দরবনে যুক্ত হচ্ছে আরও ১৮টি অঞ্চল। নতুন এই ১৮টি অঞ্চলকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। কয়েক দিনের মধ্যে এমন ঘোষণা করবে বন অধিদফতর। বিষয়টি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন সুন্দরবন (পশ্চিম) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মদিনুল আহসান। বর্তমানে এ বনে চারটি অভয়ারণ্য রয়েছে। মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক নানা কারণে প্রতিনিয়ত হুমকি বাড়ছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের। তাই সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অভয়ারণ্যের এলাকা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এমন পরিকল্পনাকে যুগপোযোগী জানিয়ে বাঘ-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু অভয়ারণ্য ঘোষণা নয়, এ জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত আইনগত কাঠামো। সুন্দরবন বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, যেখানে আছে ৩৩৪টি প্রজাতির উদ্ভিদ ও ৩৭৫ প্রজাতির প্রাণী। ১৯৭৫ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ওই ঘোষণার পরও নানা প্রতিকূলতার কারণে হুমকির মুখে পড়তে থাকে এ বনের উদ্ভিদ ও প্রাণী। এখানকার জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ১৯৯৭ সালে ইউনেসকোর সহায়তায় কটকা, কচিখালী, নীল কমল ও সুন্দরবন পশ্চিম অঞ্চলে অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান অভয়ারণ্য কটকা, কচিখালী, নীল কমল ও সুন্দরবন পশ্চিম অঞ্চলের আশপাশের এলাকাগুলোকেই নতুন অভয়ারণ্যের তালিকায় আনা হতে পারে। বিশেষ করে বাঘের বিচরণকৃত এলাকাকে এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে সভা-সমাবেশ-সেমিনারসহ নানা কার্যক্রম চলছে। মূলত প্রজননক্ষমতা বাড়িয়ে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে। সুন্দরবন (পশ্চিম) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মদিনুল আহসান বলেন, অভয়ারণ্য অঞ্চলে বণ্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ, বংশবিস্তার ও জীববৈচিত্র্য বনের অন্য অংশের তুলনায় বেশি সংরক্ষিত। এর সুফলও মিলছে, যা উঠে এসেছে সুন্দরবনে পরিচালিত জরিপেও। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাইদ আলী বলেন, বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তার জন্য অভয়ারণ্য বৃদ্ধির বিকল্প নেই। সেই দিক বিবেচনা করেই সরকার অভয়ারণ্য বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছরের শেষের দিকে অভয়ারণ্যের ঘোষণা আসতে পারে বলেও আশা করছেন তিনি। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর নাজমুস সা’দাত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারের নতুন ১৮ অভয়ারণ্যের উদ্যোগকে সাধুবাদ। সুন্দরবনের অভয়ারণ্যের পরিপূর্ণ সুফল পেতে হলে বন বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। একইভাবে অভয়ারণ্য রক্ষায় সুন্দরবননির্ভর জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সর্বশেষ খবর