মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

শখের বাগান বাড়ির ছাদে

নওগাঁ প্রতিনিধি

শখের বাগান বাড়ির ছাদে

ছাদের যেদিকে চোখ যায় শুধু গাছ আর গাছ। ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে ছাদের সাজানো বাগান। পাশাপাশি বাড়ির চারপাশের বেলকুনিতেও ঝুলন্ত লতা। তাতে ফুটেছে নানান রঙের ফুল। নওগাঁ শহরের পার-নওগাঁ মহল্লার শহিদের পুরো বাড়িটিকে এভাবেই গাছের বাগান রূপে সাজানো শহিদ জানান, ছোট বেলা থেকেই বাগান করার শখ ছিল। কিন্তু সময়ের অপ্রতুলতায় সেই বাগান করা হয়ে ওঠেনি। এখন তিনি ব্যবসায়ী। কাজ করছেন কৃষি ও পরিবেশ উন্নয়ন নিয়ে। তার সেই শখকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে শুরু করেন গাছ সংগ্রহ। শখের বশে দু-একটি করে গাছ সংগ্রহ করতে করতে এখন সেটি হয়েছে বিশাল এক সংগ্রহশালা। শখের সেই বাগানটি এখন বিশাল আকার ধারণ করেছে। অবসরে তার ছাদের বাগানে এসে দুদণ্ড দাঁড়ালে প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। গাছের স্থায়ীত্বের কথা চিন্তা করে রড সিমেন্টের মিশ্রণে শহিদ তৈরি করেছেন বিশেষ এক ধরনের ফার্ন বা টব। যাতে করে গাছগুলো বড় হওয়ার প্রক্কালে শিকড়গুলো ছাদের কোনো ক্ষতি না করে টবের বাড়তি অংশে ছড়িয়ে যেতে পারে। এত কিছুর অন্তরালে প্রতিটি গাছ বেড়ে উঠেছে আপন মনে। সারি সারি করে টবে রাখা গাছগুলো যে কারও নজর কাড়ে খুব সহজেই। শহিদের বাগানে শতাধিকেরও বেশি দেশি-বিদেশি জাতের ফল, ফুল ও শোভাবর্ধন গাছসহ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির সমারোহ। রয়েছে বিলুপ্ত ও দুর্লভ প্রজাতির গাছগুলো। দেখা মেলে চিরহরিত্ ও গুল্ম বৃক্ষেরও। রয়েছে হরেক রকমের দেশি, বিদেশি সিজিনারি ফুল। তার বাগানে যে সমস্ত গাছ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে থাই আম, থাই চেরি, থাই জামু্বরা, ছোবেদা, ডালিম, চাইনিজ কমলা, থাই কট লেবু, দেশি লেবু, উন্নত জাতের কদবেল, উন্নত জাতের থাই পেয়ারা, এবোক্যাডো, লংগিয়ান, আশফল, থাই জলপাই, থাই কামরাঙ্গা, করমোচা, ক্যান্ডার, আমড়া, হরিফল, পিস ফল, আলু বোখারা ও জামরুলসহ বেশ কিছু ফলের গাছ। রয়েছে ব্রায়া, জিমিয়া পাম্প অলস্পাইস, বিলিংহার্ড, বাগান বিলাস, এলোভেরা, চায়নিস বাম্বু, ড্রেসিনা ফরচুন, ট্রপিক স্নো, তুলসী ও বেশ কয়েক প্রজাতির ফুলের গাছ। টগর, বেলি, থায়কার্ট গোলাপ, টিউলিপ ইত্যাদি অন্যতম। তাছাড়া বেলকোনে ঝুলছে নানান প্রজাতির অর্কিড গাছ। ফুটেছে নানান ফুল। বাগানের ফল গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করেছে। বেশ কিছু গাছে ধরে আছে তাজা ফল। যে ফলগুলোতে কিটনাশক নেই। জানা গেছে, শহিদকে ছাদের বাগান করার উত্সাহ দিয়ে যাচ্ছেন সবুজ আলো কৃষি উন্নয়ন ও গবেষণা কেন্দ্রের বগুড়ার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। ফলে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সরবরাহ ও সহযোগিতায় তার ছাদের বাগান একটি মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শহিদ বলেন, ‘আমি বাড়ির ছাদে, সরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় এবং বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানার জায়গায় বাগান তৈরি করে দিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছি এবং চাহিদা অনুযায়ী সবুজ আলোর নার্সারি দেশের সব প্রান্তে বাগান নির্মাণে সবাইকে সার্বিক সহযোগিতা করছি। কারণ চাই— প্রতিটি জায়গাই হোক গাছের আবাস ভূমি। প্রতিটি গাছই হোক মানুষের বেঁচে থাকার হাতিয়ার।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর