বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে সশস্ত্র সংঘর্ষে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা

দখল-বেদখলের তুমুল লড়াই

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে সশস্ত্র সংঘর্ষে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা

চট্টগ্রামে গতকাল দুই পক্ষের সংঘর্ষে অস্ত্র নিয়ে অংশ নেন এই তিনজন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রাম নগরীতে আধিপত্য বিস্তার ও রাস্তার পাশে অবৈধ দোকান দখল-বেদখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির পৃথক ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সাধারণ মানুষ ও দোকানপাট বন্ধ করে দ্রুত বিভিন্ন দিকে ছোটাছুটির সময় অন্তত ১০ জনের মতো আহত হয়েছে। গতকাল বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নগরীর আগ্রাবাদের সিজিএস কলোনি এবং কমার্স কলেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের উপস্থিতির ফলে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে স্থানীয়রা জানান। তবে এ ঘটনার সময় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন করলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সুমন, বাদল, আজিজসহ পুলিশ জানায়। এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ দখল নিয়েও ছাত্রলীগের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পৃথক ঘটনায় আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ এলাকায় রাস্তার পাশে অবৈধ দোকান দখল নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়দানকারী পিচ্চি মুন্না, আজিম, সাব্বির, আশরাফ এবং আগ্রাবাদ সিজিএস কলোনি এলাকায় আজিজ, পারভেজ, মাসুম, জাহাঙ্গীর, মাইকেল রনি, তানবির, জাহাঙ্গীর প্রমুখ। এরা সবাই স্থানীয় কাউন্সিল আবদুল কাদের, যুবলীগ নেতা আবদুল মান্নান ফেরদৌস, কাউন্সিলর এইচ এম সোহেল ও ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমনের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের ডবলমুরিং জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) হাসান ইকবাল বলেন, কাউন্সিলর সোহেলের ছেলেরা মিছিল বের করেছিল। তারা আরেক (লিমন) গ্রুপের একজনকে কিছুদিন আগে মারধর করেছিল। এ ঘটনায় ছেলেরা মিছিলটি দেখে তাদেরকে ধাওয়া দেয়। এরপর মারামারি শুরু হয়। পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ছাড়া মারামারিতে কাউন্সিলর সোহেলের অনুসারী এক যুবক আহত হয়েছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান। মারামারির বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাইফুল আলম লিমন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারি বাসা নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর সোহেল বিএনপির লোকদের অবৈধভাবে সহযোগিতা করে আসছে। এতে ছাত্রলীগের কর্মীরাসহ বৈধ বসবাসকারী ব্যক্তিদের মধ্যে হাতাহাতি ও বিচ্ছিন্ন কিছু মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৮-১০ জনের মতো আহত হয়েছে। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলে কাউন্সিলর মামলা তুলে নিতেও হুমকি দিয়ে আসছে বলে তিনি জানান। তবে এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় কাউন্সিলর এইচ এম সোহেল বলেন, মারামারির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এটা বলেই ফোন কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেন।

চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদ নুরুল আজিম রনি দাবি করে বলেন, ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে একটি গ্রুপ সক্রিয় হয়ে আছে। ছাত্রলীগ অনিয়ম, অবৈধ কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। এতে কেউ দলের বা ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে অবৈধ সুবিধা আদায় করে, তাহলে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ ছাড়া নগরীর বায়েজীদ থানার শেরশাহের বাংলাবাজার এলাকায় যুবলীগের আধিপত্য বিস্তার নিয়েও সন্ধ্যা ৭টার দিকে নাজিম ও রিপন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুলাল নামের এক যুবলীগ কর্মী আহত হয়েছে। তবে আহত দুলালকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে চট্টগ্রাম মেডিকেল সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর