বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
সাভারে ধর্ষণের শিকার আরেকজন

নির্যাতিত শিশুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি মেডিকেল বোর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

পাশবিক নির্যাতনের শিকার পাঁচ বছরের শিশুটির চিকিৎসায় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করতে নতুন কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি মেডিকেল বোর্ড। দিনাজপুরের পার্বতীপুরে শিশুটি অমানবিক নির্যাতনে গুরুতর আহত হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। এরপর গত ২৬ অক্টোবর তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পূর্বনির্ধারিত মেডিকেল বোর্ডের সভা বসে। এ সময়  শিশুটির স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হয়েছে। সভায় আগের মতোই চিকিৎসা চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে সোমবার রাতে সাভারে ধর্ষণের শিকার হয়ে সকালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে দশ বছরের আরেক শিশুকে। বোর্ড সভা শুরুর আগে ওসিসির চিকিৎসক ডা. বিলকিস বেগম জানিয়েছেন, এই রোগী সহজে ভালো হওয়ার কথা না। তার যে কন্ডিশন তাতে সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে। এখন পর্যন্ত আমরা শুধু তার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। শিশুটির যে পরিমাণ ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে এতে তার সুস্থতা আর স্বাভাবিকতা কবে ঠিক হবে এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। একইসঙ্গে তিনি শিশুটির অঙ্গহানির আশঙ্কায় তার সার্জারি কিংবা অপারেশনের তাত্ক্ষণিক সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছেন। সভা শেষে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. খাজা আবদুল গফুর বলেন, শিশুটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগের মতোই চিকিৎসা চালানো হবে। আর তার ক্ষত দ্রুত শুকানোর জন্য পুষ্টিকর যা যা খাবার তা দেওয়া হবে। ক্ষত না শুকানো পর্যন্ত নতুন করে কোনো কিছু করার সিদ্ধান্তে যাওয়া যাচ্ছে না। বেলা ৩টার দিকে শিশুটিকে দেখতে ওসিসিতে যান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। না হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। সেই সঙ্গে পুলিশের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে যাতে তারা মামলাগুলো দ্রুত নিয়ে ভালোভাবে তদন্ত করে দেখে এবং চার্জশিটও যেন শক্তভাবে উপস্থাপন করেন। গত ১৮ অক্টোবর দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পাশবিক নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়।

পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। 

সাভার প্রতিনিধি জানান, ধর্ষণের শিকার হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ১০ বছরের শিশুটিকে গতকাল সকালে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার গভীর রাতে সাভারের আড়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

শিশুটির মা জানান, সোমবার রাতে স্থানীয় একটি মেলা দেখতে যায় তার মেয়ে। সেখান থেকে রাত ৯টার দিকে ফেরার সময় এলাকার রতন নামে এক যুবক তাকে কেক খাওয়ার কথা বলে রাস্তার পাশের একটি দোকানে ডাকে। পরে তাকে তার মোটরসাইকেলে করে নিজের বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এতে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে সাভার বাস স্ট্যান্ডের বটতলা নার্সারিতে ফেলে রেখে যায় ধর্ষক। মেয়েটিকে সকালে সেখানে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাকে ঢামেকে স্থানান্তর করা হয়।

সর্বশেষ খবর