বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
জেলা পরিষদ নির্বাচন

নির্বাচনে না যাওয়ার আভাস বিএনপির

মাহমুদ আজহার

নির্বাচনে না যাওয়ার আভাস বিএনপির

আগামী ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য তৃণমূলে ন্যূনতম জনপ্রতিনিধি না থাকায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট এ অবস্থান নেয় বলে জানা গেছে। তা ছাড়া বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো ভোটে অংশ না নেওয়ার অবস্থানও রয়েছে জোটের। জেলা পরিষদের প্রশাসক পদের জন্য প্রস্তাবক ও সমর্থক হওয়ার অনিচ্ছার কথাও শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বিএনপি সমর্থিত অনেক জনপ্রতিনিধি।

তবে এ নিয়ে শিগগিরই জোট ও দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে জোটের অবস্থান পরিষ্কার করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে সম্প্রতি ২০-দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে নির্বাচনে না যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।

বৈঠকে দু-একজন বাদে ২০-দলীয় জোটের নেতাদের সবাই এ নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত দেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি জেলায় স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের ভোটেই জেলা পরিষদের  চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত হবেন। প্রতিটি জেলায় ১৫ জন সাধারণ ও পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য থাকবেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার হন সংসদ সদস্যরা এবং তাদের প্রস্তাব ও সমর্থন ছাড়া কেউ প্রার্থী হতে পারেন না। একই নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে জেলা পরিষদ নির্বাচনেও। ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশের যে কোনো ভোটার জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারলেও ভোট দিতে পারবেন না। আর জনপ্রতিনিধিরা ভোটার হলেও প্রার্থী হতে পারবেন না। এ প্রসঙ্গে গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে অধিকাংশ নেতাই জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা বলেছেন। তবে এ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও জোটের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ আছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সব স্থানীয় নির্বাচন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ইলেকটোরাল ভোটে  জেলা পরিষদ নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের  ঘোষিত এ পদ্ধতি সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী।’ জানা যায়, জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে এখন আর ভাবছে না বিএনপি। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের সেই প্রস্তুতিও নেই। স্থানীয় সরকারের অন্য সব নির্বাচনে কয়েক মাস আগে থেকেই তৃণমূলের নেতারা কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতাদের দ্বারস্থ হন। কিন্তু জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি সমর্থিত কোনো জনপ্রতিনিধিই বিএনপির নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এ নিয়ে জেলা পর্যায়ে নেতাদেরও কোনো আগ্রহ নেই। এ প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘স্থানীয় সরকারের অন্য সব নির্বাচনে তৃণমূলের নেতাদের তদবিরে অতিষ্ঠ থাকতেন তিনি। কিন্তু এ পর্যন্ত জেলা পরিষদের প্রশাসক পদে নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হতে একজন নেতাও আসেননি। এ নিয়ে কেন্দ্র বা তৃণমূল কারোরই কোনো আগ্রহ নেই।’ বিএনপি নেতারা জানান, বিগত স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনেই জনমতের প্রতিফলন হয়নি। ভোট ডাকাতি করে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি পদ ছিনিয়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এরপরও বিএনপি জোট সমর্থিত কিছু জনপ্রতিনিধি  থাকলেও তাদের অধিকাংশই এখন নানা কারণে বহিষ্কৃত। অল্প কিছু জনপ্রতিনিধি এখনো টিকে থাকলেও তারা এ নিয়ে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। যেখানে ন্যূনতম জনপ্রতিনিধি বিএনপির হয়নি, সেখানে বিএনপি অংশ নেবে কেন? জেলা পরিষদ নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে অংশ নেওয়া মোটেই ঠিক হবে না বলেও মনে করেন তারা।

সর্বশেষ খবর