শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রজাপতির বর্ণিল মেলা

জাবি প্রতিনিধি

প্রজাপতির বর্ণিল মেলা

হরেক রকম প্রজাপতির জমজমাট মেলা বসেছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি)। গতকাল দিনভর অগণিত মানুষ দেখেছে এই মেলা। দর্শকের অনেকেই জানিয়েছেন, এত রঙের এত বাহারের আর এত কাছ থেকে এমন জীবন্ত দৃশ্য তারা কখনো দেখেননি।

‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ স্লোগান ধারণ করে গতকাল সপ্তমবারের মতো প্রজাপতি মেলা, ২০১৬-এর আয়োজন করেছিল জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগ। সকাল সাড়ে ১০টায় জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে এর উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে দর্শনার্থীর ঢল নামে মেলা প্রাঙ্গণে। শিশু-কিশোরদের সরব উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো; যা মেলায় অন্য রকম প্রাণ ফিরিয়েছিল। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য  থেকে জানা গেছে, মেলার বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে ছিল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, শিশু-কিশোরদের ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, ৮০টি প্রজাতির প্রায় ২ হাজার জীবন্ত প্রজাপতির হাট দর্শন, প্রজাপতি আদলের ঘুড়ি ওড়ানো, বিতর্ক ও প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা, ডকুমেন্টারি প্রদর্শন এবং অ্যাওয়ার্ড প্রদান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইইউসিএনের (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল জব্বার হাওলাদার প্রমুখ। প্রজাতির রঙে মন রাঙাতে পরিবার নিয়ে মেলায় আসেন শত শত মানুষ। তাদের মধ্যে মিরপুরের হামজা রহমান বলেন, ‘মন চায় ইট-পাথরের এই শহরের বাইরে পরিবার নিয়ে নিরিবিলি পরিবেশে ঘুরে আসি। প্রজাপতি মেলা সে সুযোগ করে দিয়েছে।’ জাবি স্কুল ও কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসলিমা খানম বলে, ‘বন্ধুদের সঙ্গে প্রজাপতি মেলা দেখতে এসেছি। জীবন্ত প্রজাপতি দেখতে কার না ভালো লাগে! নানা রঙের প্রজাপতি চোখের সামনে উড়ছে, এ এক অন্য রকম দৃশ্য।’ প্রজাপতি মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এটিই এশিয়ার একমাত্র প্রজাপতি মেলা। প্রজাপতি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ধারাবাহিকভাবে এর আয়োজন করে আসছে। এ মেলা একদিকে প্রকৃতিপ্রেমীদের যেমন আনন্দ দিচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও প্রজাপতিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সহায়তা করছে।’ বিকালে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে মেলার সমাপনী টানা হয়। এ সময় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সার্বিক অবদানের জন্য প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনকে বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। ইয়াং বাটারফ্লাই ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন খানকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর