শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

যুক্তরাজ্যে দণ্ডিত ইমাম পালিয়ে বাংলাদেশে

প্রতিদিন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে দণ্ডিত ইমাম পালিয়ে বাংলাদেশে

যুক্তরাজ্যে প্রায় তিন দশক আগে শিশুদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় পলাতক বাংলাদেশি এক ইমামের সাড়ে ১১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। ৫৮ বছর বয়সী হাফিজ রহমানের অনুপস্থিতিতেই বৃহস্পতিবার বার্মিংহামের উলভারহ্যাম্পটন ক্রাউন কোর্ট তাকে সাজা দেয় বলে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে। ১৯৮৬ সালের মার্চ থেকে ১৯৮৭ সালের আগস্টের মধ্যে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডের এক মসজিদে শিশুদের যৌন নির্যাতনের পাঁচটি ঘটনায় আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। খবর বিডিনিউজের

গত মাসে একই আদালত তাকে দোষী  সাব্যস্ত করার পর দিনই তিনি বার্মিংহাম এয়ারপোর্টে বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট ধরে পালিয়ে যান। নেদার্টনের বলার্ড রোডের বাসিন্দা সাত সন্তানের জনক এই ইমাম নিজেকে অসুস্থ দাবি করে বিচার চলার বেশিরভাগ সময় আদালতে হাজির হননি। রায় ঘোষণার সময় বিচারক নিকোলাস কাটরাইট বলেন, আসামি অসুস্থ হয়েছেন বলে মিথ্যা বলে ঘটনার ভুক্তভোগী ও নিজের আইনজীবীদের প্রতারিত করেছেন। এই ইমাম কীভাবে ভুক্তভোগী এক শিশুর উপর ‘প্রায় প্রতিদিন’ অত্যাচার চালাতেন তার বর্ণনা এর আগে আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়। ১৯৮০-এর দশকের ওই নিপীড়নের ঘটনাগুলোর সময় হাফিজ রহমান ক্রেডলি হিথে কুইন্স ক্রস মসজিদে ইমামতি করতেন। ঘটনার সময় এক নারী আদালতকে বলেন, ক্রেডলি হিথের ওই মসজিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা তাকে ‘ঈশ্বরের’ মতো ভক্তি করত। একবার তিনি অপরাধ ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেওয়ায় ইমাম ওইদিন রাতেই তাদের বাড়িতে গিয়ে বিনা আমন্ত্রণে রাতের খাবার খেয়ে আসেন।

হাফিজের পালিয়ে যাওয়ার খবরে এর আগে তার নিপীড়নের শিকার এক নারী ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, দেশের বিচার বিভাগের কারণে তিনি নিজেকে ‘ব্যর্থ’ মনে করছেন। পুলিশ বলছে, ওই ইমামকে ফেরানোর বিষয়ে তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। নিপীড়িত ওই নারী বলেন, যখন তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তখন এটা ছিল আমার জন্য বিজয়। আমার তখন মনে হয়েছিল, ‘হ্যাঁ, এটাই তো চাই। এখন সে তার কৃতকর্মের জন্য শাস্তি ভোগ করবে’ এবং তারপরই আসামি চম্পট। আমি খুব ক্ষুব্ধ, খুব ক্ষুব্ধ, হতাশ। আমি এত ভোগান্তির মধ্য দিয়ে এসে অবশেষে এ পরিণতি! আদালতের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার পিটার আর্নল্ড বলেন, তাকে দেশে ফেরাতে ‘জোরালো পদক্ষেপ’ নেওয়া হচ্ছে। ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের ভিনি বলিনা বলেন, তাকে ফেরত পাওয়ার জন্য আবেদনের সম্ভাব্য নিয়ে আন্তর্জাতিক বিভাগের সঙ্গে আলোচনা চলছে। রায় ঘোষণার পর এক ভুক্তভোগী আদালতে বলেন, ‘এটা এখন শেষ। এখন তাকে দেশে ফেরত এনে তার সাজাভোগ নিশ্চিত করতে হবে। তার জীবন শেষ এবং আমারটা এখন আবার শুরু হবে।’ আদালত হাফিজ রহমানকে ৫ হাজার ৫৯০ পাউন্ড জরিমানা করেছে এবং শিশুদের নিয়ে কাজ করার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর