শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

টেক্সাসে বাংলাদেশির গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ দুর্বৃত্ত নিহত

প্রতিদিন ডেস্ক

মস্তানির মাধ্যমে বিনা পয়সায় সিগারেট নিতে চায় এক দুর্বৃত্ত। কিন্তু কর্মরত ম্যানেজার রাজি নন। একপর্যায়ে দুর্বৃত্তটি ম্যানেজারের পেছনে যায়। এর পরই গুলির শব্দ। স্টোরের সামনেই ছিল টহল পুলিশ। গুলির শব্দে তারা স্টোরে এসে গুলিবিদ্ধ  কৃষ্ণাঙ্গ ওই দুর্বৃত্তকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে নেয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা কিছুক্ষণ পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর এনআরবি নিউজের।

২৯ অক্টোবর (শনিবার) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টায় টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে হিউস্টন সিটির বাফেলো স্পিডওয়ে এবং ওয়েস্ট ওরেম এলাকায় অবস্থিত সানিজ ফুড মার্টে এ ঘটনা ঘটে। স্টোরের সার্ভিল্যান্স ভিডিওর উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, নিহত লোকটি কাউন্টারের পেছনে যায় এবং এরপর ভিডিওতে আর দেখা যায়নি অর্থাৎ ভিডিওর ফ্রেমের বাইরে যায়। তবে গুলির শব্দের সঙ্গে সঙ্গে ওই স্টোরের এক গ্রাহক দৌড়ে বাইরে যান— যা ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। মাইকেল লাবম নামক ওই গ্রাহক কয়েক ফুট দূর থেকে তা প্রত্যক্ষ করেন। নিহত লোকটি সিগারেট চায়, কিন্তু মূল্য পরিশোধ করবে না। এ নিয়ে বিতর্ক হচ্ছিল। সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে টানাটানির একপর্যায়ে সে বাংলাদেশি ম্যানেজার পলকের পেছনে যায় বলেও প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকে জানায়। এই স্টোরের অন্য ম্যানেজার (ঘটনার সময় স্টোরে ছিলেন না) সংবাদ পেয়ে অকুস্থলে এসে পুলিশকে জানান, ক্যাশ কাউন্টারের পেছনে একটিমাত্র দরজা ও ছোট্ট জায়গা রয়েছে। বিনামূল্যে সিগারেট না পেয়ে ক্ষুব্ধ লোকটি ওই স্থানে ঢুকে পড়ায় নিতান্তই আত্মরক্ষার্থে সে গুলি চালিয়েছেন, যা চরম সত্য। যদিও এমন কোনো পরিস্থিতি হলে সঙ্গে সঙ্গে ৯১১-এ ফোন করার নির্দেশ রয়েছে স্টোর মালিকের। মাইকেল লাবম স্থানীয় মিডিয়াকে বলেন, কাউন্টারের পেছনে যাওয়াটা কোনোভাবেই উচিত হয়নি। ৩৪ বছর বয়সী ম্যানেজার পলক অক্ষত রয়েছেন এবং পুলিশ বিস্তারিত তদন্ত চালাচ্ছে। ৩ নভেম্বর প্রাপ্ত সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী গুলিবর্ষণের জন্য পলককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও তার বিরুদ্ধে মামলা চলবে কিনা তা নির্ধারিত হবে গ্র্যান্ড জুরির সিদ্ধান্তে। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এই স্টোরের মালিক হচ্ছেন বাংলাদেশি মোহাম্মদ হানিফ এবং গুলিবর্ষণকারী ম্যানেজার পলকের বাড়ি নোয়াখালী অঞ্চলে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, নিউইয়র্ক, মিশিগান, জর্জিয়া, কানেকটিকাট, ওয়াশিংটন মেট্রোসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ডজনখানেকের অধিক বাংলাদেশি কর্মরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ অথবা ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। স্টোর থেকে মালালাল চুরি, মূল্য না দিয়ে জোরপূর্বক পণ্য নেওয়া, নগদ অর্থ লুটে বাধা দেওয়ার কারণে এসব বাংলাদেশিকে খুন করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে হিউস্টনের এই পলক আত্মরক্ষার্থে চরম এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন বলে অনেকে মনে করছেন।

সর্বশেষ খবর