রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গতি নেই উড়ালসড়ক নির্মাণে

নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর নাখোশ সরকারও

মানিক মুনতাসির

গতি নেই উড়ালসড়ক নির্মাণে

স্থবির হয়ে পড়েছে ঢাকা উড়ালসড়কের (ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণ কাজ। আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরুর ১৪ মাস পর এ প্রকল্পের কাজ এগিয়েছে খুবই সামান্য। এ সময়ের মধ্যে প্রকল্পটির সাত হাজার পাইলের মধ্যে ৫০০ পাইলের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর বাইরে প্রকল্পের কাজে উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগ। এ প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল ২০১৩ সালে। আর আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু হয়েছে গত বছরের আগস্টে। কাজ শুরুর ১৪ মাস শেষে এখনো ৫ শতাংশও কাজ শেষ করতে পারেনি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। কাজের এমন ধীরগতির কারণে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইটাল থাইয়ের ওপর অনেকটা নাখোশও হয়ে পড়েছে সেতু বিভাগ।

তবে এ প্রকল্পের পরিচালক কাজী মো. ফেরদৌস গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কাজ মোটামুটি একটা গতিতে এগিয়ে চলছে। সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা বলা যাবে না। কেননা সন্তোষজনক কথাটার সংজ্ঞাটা তো একেক জনের কাছে একেক রকম। কত শতাংশ কাজ হয়েছে সেটাও এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। তিনি আরও বলেন, এখন কাজের সময়। কথা বলার সময়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের স্টার্টিং পয়েন্ট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রকল্পের কাজে ব্যবহূত ইট, লোহা, বালি, নুরি পাথরসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে। স্বল্পসংখ্যক শ্রমিককে ইটের কাজ করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কাছাকাছি পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের অপর অংশের ভূমি অধিগ্রহণ এখনো শেষ হয়নি বলে জানা গেছে। জানা গেছে, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক নির্মাণ করছে সরকার। প্রকল্পের পাইলিং কাজ ইতিমধ্যে কুড়িল পর্যন্ত পৌঁছেছে। দীর্ঘ এ উড়াল সড়কের প্রথম ধাপে নির্মাণ করা হবে বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। দ্বিতীয় ধাপে এ প্রকল্পের বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার এবং শেষ পর্যায়ে মগবাজার থেকে কমলাপুর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে। সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, চার লেন বিশিষ্ট এই উড়াল সড়কটির মূল অংশের দৈর্ঘ্য হবে মোট ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। আর ৩১টি র্যাম্প ও সংযোগ সড়কসহ এর দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এ উড়াল সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। রাজধানীর যানজট কমাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হবে আশা করছে সেতু বিভাগ। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজধানী ঢাকার যানজট অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করে সরকার। এ ছাড়া ঢাকার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াতের ক্ষেত্রেও ঢাকাবাসীর সময়ের ব্যবধান এবং ভোগান্তি কমে আসবে অনেকটাই।

সর্বশেষ খবর