রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ

পা হারালেন বাবা, মামলাও নেয়নি পুলিশ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

পা হারালেন বাবা, মামলাও নেয়নি পুলিশ

দুই মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার বিচার চাওয়ায় এক পিতাকে দুই পা হারাতে হয়েছে। বর্তমানে তিনি ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের বি ওয়ার্ডের ৬১ নম্বর বেডে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার নলভাঙ্গা গ্রামে। বখাটেরা এলাকার প্রভাবশালী ও আওয়ামী পরিবারের সদস্য হওয়ায় থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ভুক্তভোগী শাহানুর বিশ্বাসের ভগ্নিপতি ইয়াকুব মণ্ডল বাদী হয়ে এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ আদালতে একটি মামলা করেন। মামলার কারণে বর্তমানে অসহায় পরিবারের সদস্যরা গ্রামে প্রবেশ করতে পারছেন না।

জানা গেছে, কৃষক শাহানুর বিশ্বাসের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে শারমিন আক্তার যশোর সরকারি মহিলা কলেজে অনার্সে ও ছোট মেয়ে শাহনাজ আক্তার স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তাদের আসা-যাওয়ার পথে ওই গ্রামের মাহবুব মেম্বারের (সাবেক) বখাটে ছেলে আজম ও তার সহযোগীরা উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এ নিয়ে গ্রামে কয়েকজনের কাছে বিচার দেন শাহানুর। এতে ক্ষিপ্ত হন মাহবুব ও বর্তমান মেম্বার কামাল। ১৬ অক্টোবর সকালে রাজমিস্ত্রির সন্ধানে বাড়ি থেকে শাহানুর বের হয়ে কিছু দূর গেলে তার পথ আগলে দাড়ান মাহবুব, কামাল, আজম, হাসান, মোতালেব, বিল্লাল, জাহিদ, ইমদাদ, দুখুসহ অনেকে। তারা উদ্দেশ্যমূলক শাহানুরের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে ফেলা হয় শাহানুরের দুই পা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে গুরুতর জখম করা হয় তার শরীরের বিভিন্ন অংশ। মৃত্যু হয়েছে ভেবে তাকে রাস্তায় ফেলে চলে যান। খবর পেয়ে শাহানুরের স্ত্রী ও দুই মেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার দুই পা কেটে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনার ২০ দিন পরও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। অভিযোগ রয়েছে, হামলাকারীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ কারণে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শাহানুরের বড় মেয়ে শারমিন আক্তার অভিযোগ করে জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ নিয়ে তার বড় ফুফা বার বার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নজরুল ইসলামের কাছে গেলেও অভিযোগ রাখা হয়নি। উল্টো তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল হক জানান, ‘এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে বলে জেনেছি। সেই মামলার কপি এখনো থানায় এসে পৌঁছায়নি।’

সর্বশেষ খবর