সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অনিয়ম ঠেকাতে মাঠে নামছে দুদক

১০ টাকার চাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রির সব ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি ঠেকাতে আজ থেকে মাঠে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ জন্য দুদকের ২২ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ও সহকারী পরিচালককে প্রধান কার্যালয় থেকে গতকাল চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সারা দেশে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি নিয়ে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চালসংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজদের তথ্য-উপাত্তসহ আইনের আওতায় আনতে হবে। দুর্নীতিবাজদের ধরতে আজ থেকে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করছে দুদক। এ জন্য দুদকের দেড় শতাধিক কর্মকর্তা মাঠে থাকবেন। এ ছাড়া গত সাত দিনে অভিযানে চাল বিক্রির অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে দুদক। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গতকাল দুদকের সমন্বিত ২২ জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া    হয়েছে। দুদক ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ দরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ কর্মসূচি চালু করেছে সরকার। হতদরিদ্রদের জন্য এই মহতী উদ্যোগ নেওয়া হলেও চালের বড় একটি অংশই চলে যাচ্ছে বিত্তবানদের পকেটে। ডিলার নিয়োগে অনিয়মের শেষ নেই। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতা-কর্মী, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, বাড়িওয়ালা, চাকরিজীবীসহ আর্থিকভাবে সচ্ছলরাই হয়ে যাচ্ছেন চালের মালিক। প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে গরিবের চাল বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বঞ্চিত হচ্ছে অতিদরিদ্রদের বড় অংশ। কয়েক দিন আগে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর ভাষায় সতর্ক করে বলেছেন, চাল নিয়ে অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

কিন্তু এর পরও চাল নিয়ে দেশব্যাপী অনিয়মের নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের তীর ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেও। সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, খাদ্য কর্মকর্তা, ট্যাগ অফিসার ও ডিলাররা যোগসাজশ করে এসব চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। দুদক জানায়, চাল নিয়ে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগে ৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের তিন খাদ্য পরিদর্শকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে দুদক। এরা হলেন খাদ্য পরিদর্শক শুভজিৎ দে, মো. শাহনেওয়াজ ও মো. শাহাবুদ্দিন এবং ডিলার সৈয়দ মো. মারুফ ও জাহাঙ্গীর আলম। দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মো. আবু সাইদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ডিলারের সঙ্গে কারসাজি করে চাল আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ায় এ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে ৩ নভেম্বর ময়মনসিংহ থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে দুদক। এর মধ্যে দুজন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এবং একজন ডিলার। এ ছাড়া ১ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয় তিনজনকে।

সর্বশেষ খবর