সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আকাশ থেকে হোল্ডিং জরিপ চালাবে ড্রোন

অনুমতি চাইছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

সঠিকভাবে রাজস্ব আদায়ে হোল্ডিং জরিপ চালানো ও ট্যাক্সেশন ম্যাপ প্রস্তুত করতে ‘ড্রোন’ ব্যবহার করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানি এসব ড্রোন নিয়ে আসবে। কার্যক্রম শেষে ওই ড্রোন আবার ফেরত নিয়ে যাবে প্রতিষ্ঠানটি। সাময়িকভাবে রিমোটচালিত ছোট আকারের এই আকাশযান বাংলাদেশে আনার জন্য বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চেয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা রিমোটচালিত এ ধরনের ছোট আকাশযান দেশে আনার প্রক্রিয়াগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার পর সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ড্রোনের সামরিক ও বাণিজ্যিক ব্যবহার রয়েছে। বাংলাদেশে রিমোটচালিত ছোট এই আকাশযান ব্যবহারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন নিতে হয়। এ ছাড়া দেশের বাইরে থেকে এ ধরনের পণ্য আমদানি বা ব্যবহারের জন্য দেশে আনার ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরও অনুমোদন লাগে।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশের ট্যাক্সেশন ম্যাপ প্রস্তুত করতে বা নির্ভুলভাবে হোল্ডিং জরিপ চালাতে ড্রোন বা অ্যারোপ্লেন ব্যবহার হচ্ছে। আমরা যেহেতু ছোট আকারে একটি এলাকায় কাজ করব সে কারণে ড্রোন ব্যবহারের জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।’ আনিসুল হক বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানি এই ড্রোন নিয়ে আসবে। তাদেরই আর্থিক সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষে ড্রোন আবার ফেরত নিয়ে যাবে তারা। এ ক্ষেত্রে আমাদের কোনো আর্থিক সংশ্লেষ নেই।’ ডিএনসিসি জানায়, দক্ষিণ কোরিয়ার যে প্রতিষ্ঠানটি ড্রোন এনে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে তার নাম ন্যাশনাল আইটি ইন্ডাস্ট্রি প্রমোশন এজেন্সি (এনআইপিএ)। প্রতিষ্ঠানটি পাইলটিং হিসেবে একটি ছোট এলাকায় (গুলশান ১ নম্বর চত্বর থেকে ২ নম্বর চত্বরের পশ্চিম পাশের লেক পর্যন্ত) হোল্ডিং জরিপ, নির্ভুল হোল্ডিং কর ও ট্যাক্সেশন ম্যাপ করবে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। তারা পাইলটিং এলাকার এরিয়াল ফটোগ্রাফি গ্রহণের জন্য ছয় থেকে সাত দিন ওই ড্রোন ব্যবহার করবে।

ডিএনসিসির কর্মকর্তারা জানান, এরই মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় হোল্ডিং জরিপ চালানো হয়েছে। বাড়ির মালিকদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ওই জরিপ চালানো হয়। কাগজে দেওয়া সেই তথ্য সঠিক কি না সেটি সহজেই যাচাই-বাছাই করা যাবে ড্রোনের মাধ্যমে আকাশ থেকে ট্যাক্সেশন ম্যাপ করার পর। এর ফলে করপোরেশনের কর নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করা যাবে। রাজস্ব আয়ও বাড়বে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ড্রোনটি আনার পর সেটি বিনা শুল্কে ছাড়ের অনুমোদন চেয়ে গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাহুল ইসলাম। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকা মহানগরীকে দৃষ্টিনন্দন, সবুজ, পরিচ্ছন্ন, যানজটমুক্ত, পরিবেশবান্ধব, আলোকিত, আধুনিক ও উন্নত নগর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। সরকারও চায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব আয় বৃদ্ধি করুক এবং আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হোক। সিটি করপোরেশনের আয়ের মূল উৎস হোল্ডিং কর। তাই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পাইলটিং এলাকায় হোল্ডিং জরিপ, সঠিক কর নির্ধারণ এবং ট্যাক্সেশন ম্যাপ প্রস্তুত করার লক্ষ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান এনআইপিএ-কে বিনা শুল্কে ড্রোন আনয়ন ও ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়ার অনুরোধ করা হলো।

সর্বশেষ খবর