মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ট্রাম্প জিতলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অভিবাসীরা

------------হুমায়ূন কবির

জিন্নাতুন নূর

ট্রাম্প জিতলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অভিবাসীরা

‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে বাংলাদেশি অভিবাসীরা কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে আশঙ্কা করছি। কারণ তিনি অভিবাসীদের ব্যাপারে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। হয়ত কিছু লোককে বের করে দেবেন। এর ফলে বাংলাদেশিরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। আর যদি হিলারি ক্লিনটন নির্বাচিত হন, তবে বাংলাদেশ লাভবান হবে বলে ধারণা করছি। কারণ হিলারি বাংলাদেশ এবং এ দেশের মানুষের প্রত্যাশা সম্পর্কে জানেন, যা আমাদের জন্য এক ধরনের ক্যাপিটাল। তবে আমরা সে সুযোগ ব্যবহার করতে পারব কি-না জানি না।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘যদি হিলারি নির্বাচিত হন, তবে ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান সম্পর্কের কোনো প্রভাব পড়বে না। এতে আমাদের রফতানি আয়ও বজায় থাকবে। নিরাপত্তা বিষয়েও তাদের দেওয়া সহযোগিতা বজায় থাকবে। আর এমনটা হলে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের চলমান সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হবে।’ হুমায়ূন কবির বলেন, ‘মার্কিন নির্বাচন দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এখানে কোনো পক্ষের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। এই নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক পক্ষের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ আছে এ ধারণার সঙ্গে আমরা অপরিচিত। আমি মনে করি বাংলাদেশের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন পদ্ধতি থেকে শেখার আছে। আর তা হলো মানুষের অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ ছাড়া গণতন্ত্রকে চলতে দিলে তা সচল থাকে।’ তিনি বলেন, এই নির্বাচনের সময় দেশটির প্রশাসনকে দৃশ্যত দেখা যায় না। প্রতিটি অঙ্গরাজ্য নির্বাচন পরিচালনা করে। সেখানে পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায় না। কিছু জায়গায় এক মাস আগে থেকেই জনগণ যে কোনো সময় ভোট দিতে পারেন। এখানে মানুষকে ম্যানুপুলেট করার সুযোগ কম। মার্কিন ইলেকটোরাল পদ্ধতি সম্পর্কে এই সাবেক কূটনীতিক বলেন, এ পদ্ধতিটি গঠনগতভাবে মৌলিক। শুধু জনগণ যে ভোট দেন, এর ওপর নির্ভর করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। এই নির্বাচন পদ্ধতি ইলেকটোরাল কলেজের ওপর নির্ভরশীল। ইলেকটোরাল কলেজ হয় কংগ্রেসের দুই কক্ষের সমান সদস্যপদের ভিত্তিতে। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ নির্বাচিত হয় জনগণের সংখ্যার ভিত্তিতে। যে রাজ্যে বেশি সেখানে বেশি, যে রাজ্যে কম সেখানে কম প্রতিনিধি থাকেন। কিন্তু সিনেটে প্রতি রাজ্যের জন্য দুটি করে পদ থাকে। ইলেকটোরাল কলেজে জনগণের প্রতিনিধিত্ব এবং রাজ্যগুলোর সমতা এই দুটোকে একসঙ্গে সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে। এর সংখ্যা এখন ৫৩৮। এর অর্ধেক ২৬৯। যে প্রার্থী ২৭০ ভোট পান তিনি নির্বাচিত বলে ধরে নেওয়া হয় এবং এটি পরবর্তী পর্যায়ে নোটিফিকেশন করা হয়। আর এ পদ্ধতিতে জনমতের প্রতিফলন হয় বলে হুমায়ূন কবির মনে করেন। তিনি বলেন, ‘যে দেশগুলো রাজনৈতিকভাবে যত উন্নত সেখানে অনেক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীরে ধীরে সামাজিক কাজে রূপান্তরিত হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে তাদের রাজনৈতিক কাজের প্রতি আগ্রহী থাকেন না। আশা করছি এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশি ভোট পড়বে। কারণ নতুন ভোটার, ল্যাটিনো গ্রুপ, এশিয়ান ও নারীরা এবার বেশি ভোট দেবেন। তবে এই নির্বাচনে তারা যেভাবেই অর্থ জোগাড় করুন না কেন, এর হিসাব থাকে। এর জন্য জবাবদিহি করতে হয়। এর ফলে নির্বাচনে অর্থের অপব্যবহার হওয়ার সুযোগ নেই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর