বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

আমিনুল হাসান শাহীন, গোপালগঞ্জ

বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে নেতা-কর্মীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিকালে টুঙ্গিপাড়ায় দলের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রথম বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর শেখ হাসিনা সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রথমে তিনি সরকারপ্রধান হিসেবে ও পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দলের নবনির্বাচিত     উপদেষ্টা পরিষদ ও কার্যনির্বাহী কমিটির নেতাদের নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় তারা ফাতিহা পাঠ করেন ও মোনাজাতে শরিক হন। শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে যোগ দেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো গতকাল বেলা পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে তার পৈতৃক বাড়ি টুঙ্গিপাড়া পৌঁছেন।

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এই বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরাও অংশ নেন। স্বল্পস্থায়ী এ যৌথ সভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা। পরে বৈঠক আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। গণভবনে মুলতবি সভা অনুষ্ঠিত হবে।

টুঙ্গিপাড়ায় পারিবারিক বাসভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটের চক্রান্ত অব্যাহত রয়েছে। যখন দেশের মানুষ শান্তিতে আছে, একটু সুখের মুখ দেখতে আরম্ভ করেছে, বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগ আসতে আরম্ভ করেছে ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র করে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চাইছে। তিনি দেশের জনগণকে একযোগে এই সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তাবিধানে সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দেশের জনগণ শান্তি ও নিরাপত্তা চায় এবং আমরা সেই শান্তি ও নিরাপত্তাবিধানে অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ সম্পর্কে জনমনে যথেষ্ট সচেতনতার সৃষ্টি হয়েছে এবং কেউই এখন সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ নামের অশুভ শক্তির উত্থান দেখতে চায় না। প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জঙ্গিবাদের শিকড় খুঁজে বের করায় যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছে। তিনি বলেন, যদি সরকার ও জনগণ একযোগে প্রচেষ্টা চালায় তাহলে আমরা অবশ্যই এই মাটি থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ চিরতরে উচ্ছদ করতে সক্ষম হব ইনশা আল্লাহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীতেও জনগণ আওয়ামী লীগের পাশে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দলের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে ২০১৯ সালের নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

নেতা-কর্মীদের এখন থেকেই জনগণের জন্য কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ উন্নয়নে বিশ্বাসী। আমরা যখন দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিচ্ছি, তখন বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে, দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। দেশের মানুষ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ চায় না। দেশের মানুষ চায় উন্নয়ন। সে কারণে দেশের মানুষ ২০১৯ সালের নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করবেন বলে শেখ হাসিনা আশা করেন। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান প্রমুখ। বিকাল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফেরেন।

এ ছাড়া যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর নেতৃত্বে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা জাতির জনকের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সর্বশেষ খবর