জিয়া দাতব্য (চ্যারিটেবল) ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ২৪ নভেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত। এ ছাড়া জিয়া এতিমখানা (অরফানেজ) ট্রাস্ট মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার জেরার জন্য ১৭ নভেম্বর নতুন তারিখ রাখা হয়েছে। গতকাল খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে তার সময়ের আবেদনে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার এই তারিখ নির্ধারণ করেন।

বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এ দুই মামলার বিচার চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের এ দুই মামলায় হাজিরা দিতে সকাল ১০টার দিকে আদালতে আসেন। শুনানি শেষে বেলা পৌনে ১টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন বিএনপি প্রধান। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী আদালতের আশপাশে উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী, হাবিবুর রহমান হাবিব, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মধ্যে আদালতে ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নাল আবেদীন, আবদুর রাজ্জাক, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ। প্রথমে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদকে তিন বিষয়ে নতুন করে জেরা করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান। হারুন অর রশিদ বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার পর আগেও একবার তাকে জেরা করেছিলেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

এতিমখানা দুর্নীতি মামলা : এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় দায়ের মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল (ইকোনো কামাল), ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তৎকালীন সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

তারেক রহমান ২০০৮ সালে আদালতের মাধ্যমে জামিন নিয়ে দেশ ছাড়ার পর আর ফেরেননি। তার বিরুদ্ধে একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ আরও কয়েক ডজন মামলা রয়েছে। মামলায় মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। সর্বশেষ গত ৬ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর তার জেরার জন্য দিন রাখে আদালত। মামলার অভিযোগপত্রের ৩২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।