শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
৫৪ ধারায় গ্রেফতার

জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে নীতিমালা দিল আপিল বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিনা পরোয়ানায় ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও পুলিশি রিমান্ড প্রশ্নে ১৩ বছর আগে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে ফৌজদারি কার্যবিধির বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার (৫৪ ধারা) ও পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ধারা (১৬৭ ধারা) প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাসহ আপিল বিভাগের চার বিচারপতির স্বাক্ষরের পর এ রায় প্রকাশ করা হয়। এ দুই ধারা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব পালনের বিষয়েও সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছে আপিল বিভাগ। ৩৯৬ পৃষ্ঠার ওই রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে ৫৪ ও ১৬৭ ধারার কিছু বিষয় সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে। ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে প্রচলিত বিধি ছয় মাসের মধ্যে সংশোধন করার পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয় সরকারকে। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল গত ২৪ মে খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। তবে ৫৪ ধারা ও ১৬৭ ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা দেওয়া হবে বলে আপিল বিভাগের রায়ে জানানো হয়।

ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হওয়ার পর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের রায়টি মোডিফাই করে আপিল বিভাগ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি বিচারপতি, ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রতি কিছু নির্দেশনা রয়েছে। আসামিদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা যাবে— সে নির্দেশনাও এসেছে। গাডলাইনে প্রথমেই বলা হয়েছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় যারা আছেন, তারা যেন অতি উচ্চমানের দায়-দায়িত্ব পালন করেন। সে বিষয়ে যথাযথ সক্ষমতা তাদের দেখাতে হবে। যাকে গ্রেফতার করা হবে তাদের ক্ষেত্রে যেন মানবাধিকার ক্ষুণ্ন না হয়। যে আসামিকে ধরা হবে তাকে যেন নির্যাতন বা হেয় প্রতিপন্ন করা না হয়।

তিনি আরও বলেন, দেশে যদি যুদ্ধ থাকে বা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করে, জাতীয় নিরাপত্তা যদি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় অথবা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থাকে, সেসব পরিস্থিতিকে এই রায়ে ব্যতিক্রম হিসেবে ধরা হয়েছে। রায় পুরোপুরি পর্যালোচনা, যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে রিভিউয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর