শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গড়াই পাড়ে লালন সুরের মূর্ছনা

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

গড়াই পাড়ে লালন সুরের মূর্ছনা

কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় মহাত্মা লালন ফকির স্মরণে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী লালন মেলার শেষ দিন ছিল গতকাল। এদিনে ছিল ব্যতিক্রমী আয়োজন। লালনের স্মৃতিবিজড়িত গড়াই নদীর তীর ঘোড়াই ঘাটে আয়োজন করা হয়েছিল বাউলদের একতারায় সুরের মূর্ছনা অনুষ্ঠান। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ৬৪ জন প্রতিশ্রুতিশীল বাউলশিল্পীর অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। ঘোড়াই ঘাটে ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে’ একতারার মূর্ছনা ভরিয়ে দেয় প্রকৃতিকে। এর আগে সকাল ১০টায় সাঁইজির ধামসংলগ্ন কালী নদীর পাড়ে প্রকৃতির অবয়বে নির্মিত মঞ্চে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ‘বাউল গানের বিশ্ব পরিভ্রমণ’ শীর্ষক এ আলোচনায় লালন একাডেমিকে সাঁইজির ভাবাদর্শে নান্দনিকীকরণসহ বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। একটি আন্তর্জাতিক মানের লালন ইনস্টিটিউট তৈরির কথাও জানান তিনি। যেখানে দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীরা লালনের গান ও দর্শনের ওপর এক বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স করতে পারবেন। লাকী বলেন, লালনের আদি সুর ধরে রাখতে এরই মধ্যে শিল্পকলা একাডেমির অধীন প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। মুক্ত আলোচনা শেষে বাউলসংগীতের আয়োজন করা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ৬৪ জন প্রতিশ্রুতিশীল বাউলশিল্পী এতে অংশ নেন। এসব বাউল একে অন্যের সঙ্গে ভাববিনিময়ের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ জীবনে সাঁইজির মতাদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। প্রসঙ্গত, দুই দিনের মেলা ঘিরে ছেঁউড়িয়ায় সাঁইজির আখড়াবাড়ির আঙিনা সাজানো হয়েছিল প্রকৃতির সাজে। যে সাজে ছিল না কোনো ইট-পাথরের অস্তিত্ব। ছিল শণ আর খড়ের তৈরি স্থাপনা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে এ মেলার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে লালনের দর্শন ছড়িয়ে দেওয়া।

সর্বশেষ খবর