মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চাঁদকে সবচেয়ে কাছে পেল পৃথিবী

৬৮ বছর পর সুপার মুন

প্রতিদিন ডেস্ক

চাঁদকে সবচেয়ে কাছে পেল পৃথিবী

সুপার মুন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ ছিল বাংলাদেশেও। গতকাল মিরপুর স্টেডিয়াম থেকে তোলা ছবি —রোহেত রাজীব

চাঁদের আলোর বাঁধ ভেঙেছিল গতকাল রাতে। প্রতি মাসেই পূর্ণ চাঁদ তার আলোয় পৃথিবীকে আলোকিত করে। যাকে বলা হয় পূর্ণিমা। তবে গতকাল যে চাঁদ দেখা গেছে তা কিন্তু অন্য পূর্ণিমার মতো নয়। কাল যে পৃথিবীর খুব কাছে এসেছিল চাঁদ। আর তার এই আসা ৬৮ বছর পর। গেল রাতে যারা এই চন্দ্রিমা উপভোগ করেছেন তারা ভাগ্যবান বটে! কারণ এমন মাহেন্দ্রক্ষণ যে সব সময় মেলে না।

জ্যোতির্বিদরা জানান, পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। কিন্তু গেল রাতে এই দূরত্ব দাঁড়ায় প্রায় ২৮ হাজার কিলোমিটার কমে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৫১১ কিলোমিটার। আর যে চাঁদ দেখা গিয়েছিল তার আকারও ছিল বড়। ব্যতিক্রমী ও বড় আকারের এই চাঁদ সুপারমুন নামে পরিচিত। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ভাষ্য, গতকাল সন্ধ্যা সাতটা থেকে দেখা গেছে সুপারমুন। সাধারণ সুপারমুনের ক্ষেত্রে চাঁদ ১২ শতাংশ বড় ও ১৪ শতাংশ উজ্জ্বল দেখায়। কিন্তু এবারের সুপারমুন ১৪ শতাংশ বড় ও ৩০ শতাংশ উজ্জ্বল দেখিয়েছে সুপারমুনের অভাবে উপকূলে তীব্র জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয়। চাঁদের এ রকম উজ্জ্বলতম রূপ শেষবার দেখা গিয়েছিল ১৯৪৮ সালে। আবার দেখা যাবে ১৮ বছর পর। ২০৩৪ সালের ২৫ নভেম্বর।

সুপারমুন কী?: সুপারমুনের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ‘পেরিগি মুন’। পেরিগি অর্থ হচ্ছে ‘পৃথিবীর নিকটতম’। চাঁদ যখন পূর্ণ পূর্ণিমায় থাকে এবং বার্ষিক প্রদক্ষিণের সময় পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে, তখন একে সুপারমুন বলা হয়। পৃথিবীর কাছাকাছি আসায় এই চাঁদকে স্বাভাবিক পূর্ণিমার চাঁদের তুলনায় বড় ও বেশি উজ্জ্বল দেখায়। বিজ্ঞানের বিশ্লেষণ, সূর্যকে ঘিরে পৃথিবী ঘোরে তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে। আর পৃথিবীকে কেন্দ্র করে উপবৃত্তাকার (অনেকটা ডিমের মতো) কক্ষপথে পাক খায় চাঁদ। পৃথিবীকে একবার পাক খেতে তার সময় লাগে সাড়ে ২৭ দিন। এই সময়ের মধ্যে চাঁদ একবার পৃথিবীর কাছে চলে আসে এবং একবার পৃথিবীর থেকে দূরে চলে যায়। দূরত্বটা যখন সব থেকে কমে যায়, সেটাকে বলে ‘অনুসূর’ অবস্থান এবং তারা যখন একে অপরের থেকে সর্বাধিক দূরত্বে থাকে, সেই অবস্থানের নাম ‘অপসূর’। চাঁদই কাছে আসে পৃথিবীর। কিন্তু সেই কাছে আসাটা যে কখনই মিলনের পূর্ণতা পায় না, তার কারণ উভয়ের কক্ষপথ পৃথক। অনুসূর অবস্থানে সব সময় পূর্ণিমাও  মেলে না। কিন্তু এবার অনুসূর ও পূর্ণিমা এক সময়ে মিলে গেছে বলে এত আগ্রহ সবার মধ্যে। —এএফপি।

সর্বশেষ খবর