বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

‘আজিবার স্বর্ণ’ ধান সাড়া ফেলেছে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

‘আজিবার স্বর্ণ’ ধান সাড়া ফেলেছে

এবার রোপা আমন ধানের অধিক ফলনশীল একটি জাত উদ্ভাবন করলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার এক কৃষক। ওই কৃষকের নাম আজিবার হওয়ায় স্থানীয়রা নতুন জাতের এ ধানের নাম দিয়েছেন ‘আজিবার স্বর্ণ’। নতুন এই জাতের ধান চাষ করে তুলনামূলক বেশি ফলন হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের অনেকেই এখন এই জাতটি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের মৃত ছবেদ হোসেন মালিথার ছেলে কৃষক আজিবার রহমান জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জাতের আমন ধান চাষ করে আসছেন। জমিতে অধিকাংশ ধান গাছ একই রকম উচ্চতার হলেও দু-একটি বড় বা আলাদা ধরনের হতো। এই গাছগুলোকে আলাদা জাতের মনে হওয়ায় ধান পেকে গেলে তিনি এসব বাছাই করে আলাদা করে সংরক্ষণ করতেন। পরের মৌসুমে তিনি সেগুলো বীজ হিসেবে ব্যবহার করতেন। তার স্বপ্ন ছিল এভাবে নতুন জাতের অধিক ফলনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন করা। বেশ কয়েক বছর ধরে এভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তাতে ভালো ফল পাননি। এর পর ২০১৪ সালে তিনি এক বিঘা জমিতে ব্রি-৪৯ জাতের ধান চাষ করেন। সেই ধানের জমিতেও আগের মতোই কিছু বড় বড় ধান গাছ দেখতে পেলেন তিনি। খেতের ধান পেকে যাওয়ার পর আজিবর আগের মতোই বড় বড় ধান গাছগুলো আলাদা করে কেটে সেই ধান বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করেন। পরের বছর সেই বীজের চারা এক বিঘা জমিতে বপন করেন তিনি। এতে তিনি বেশ ভালো ফলন পান। ওই ধানের চালের ভাতও বেশ সুস্বাদু ছিল। ওই বছরই আজিবারের এ নতুন জাতের ধানের সুনাম এলাকার কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তারা আজিবারের নামানুসারে এ ধানের নাম দেন ‘আজিবার স্বর্ণ’। চলতি বছর আজিবার নিজে ৩ বিঘা জমিতে এ ধান চাষ করেছেন। এ ছাড়া এলাকার আরও ২০ থেকে ২৫ জন কৃষক তাদের জমিতে এই নতুন জাতের ধান আবাদ করেছেন। চাষি দুলাল জানান, ‘আজিবার রহমানের উদ্ভাবিত নতুন ‘আজিবার স্বর্ণ’ জাতের ধান আমি এ বছর দুই বিঘা জমিতে চাষ করেছি। ধান গাছগুলো বেশ বড় হয়েছে। শীষও অনেক বেশি। আশা করছি ভালো ফলন পাব। চাষি সিরাজুল মালিথা জানান, এলাকার অনেক কৃষক এ ধান চাষ করেছে তাই আমি আজিবার রহমানের কাছ থেকে বীজ নিয়ে এ ধান চাষ করেছি। এই এলাকার অনেক চাষি এ ধান চাষ করেছে। আগামীতে এটি আরও বিস্তার লাভ করবে। মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, আজিবার রহমান নিজে বীজ সংরক্ষণ করে  নতুন জাতের ধান চাষ করেছেন। এটা ওই এলাকায়  বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ধানের গাছগুলো তুলনামূলক বড় হয়। প্রতি গোছায় ধানের গাছের সংখ্যা ৩৫-৪০টি। জীবনকাল ১১৫-১২০ দিন। ধানের শীষও অনেক বড় বড়। প্রতিটি শীষে ধানের সংখ্যা প্রায় ২৫০-৩০০টি। ফলন বিঘা প্রতি ২০-২২ মণ। আর ধানও চিকন। তাই এটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর