শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

২০২০ সালের মধ্যে ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের দাবি

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন

নিজামুল হক বিপুল, মারাকাশ (মরক্কো) থেকে

২০২০ সালের মধ্যে ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের দাবি

জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অভিযোজন কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ ২০২০ সাল নাগাদ ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলার দাবি করেছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ একটি নতুন রোডম্যাপ চেয়েছে। এ রোডম্যাপে পর্যাপ্ত অর্থের জোগান এবং তা সময়মতো প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। মারাকাশ জলবায়ু সম্মেলনের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে এক পর্যালোচনায় বাংলাদেশ বলেছে, সবুজ জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থপ্রাপ্তি স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য একটি জটিল প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো এ তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ পাচ্ছে না। ভবিষ্যৎ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অর্থায়ন বাড়াতে সবুজ জলবায়ু তহবিলকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ অবশ্য এলডিসি ফান্ডেও পর্যাপ্ত অর্থ জোগানের দাবি জানিয়েছে। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে অর্থায়নের বিষয়টি দরকষাকষির কেন্দ্রবিন্দুতে। বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা। জলবায়ু অভিযোজনের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশেরও পর্যাপ্ত  অর্থের প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয় ও ক্ষতি (লস অ্যান্ড ড্যামেজ) ইস্যুর অগ্রগতি নিয়ে মারাকাশ সম্মেলনে বাংলাদেশ অসন্তোষ প্রকাশ করছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয় ও ক্ষতির ব্যাপারে ঝুঁকি হস্তান্তর এবং অভিবাসীদের ব্যাপারে টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ওয়ারশো ইন্টারন্যাশনাল মেকানিজমের পর্যালোচনা তিন বছর পিছিয়ে এখন ২০১৯ সালে স্থানান্তর হয়েছে। অথচ মারাকাশ সম্মেলনেই এর পর্যালোচনা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা) বাংলাদেশের এক নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। এতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ। এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, পরিবেশ ও বন সচিব ড. কামাল উদ্দিন, ড. আইনুন নিশাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করছে। বিশেষ করে ২০১৬ সাল বাংলাদেশের জন্য খুবই খারাপ বছর। দেশের প্রধান নদ ব্রহ্মপুত্র বেসিনে এ বছর বন্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ধরলা বেসিনেও এবার বন্যার তীব্রতা লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে বর্ষার পিক মৌসুমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল খুবই কম। দেশের উত্তরাঞ্চলে খরা অবস্থা বিরাজ করছে। ক্রমবর্ধমান লবণাক্ততায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলও বিপর্যস্ত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানোয়। এসব লক্ষণ প্রমাণ করে জলবায়ুর দুর্যোগ ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশ মনে করে, প্যারিস চুক্তির কার্যকর বাস্তবায়নই এ দুর্যোগ রুখতে পারে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ খুব স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্যারিস চুক্তি অনুমোদন করেছে। এ চুক্তি অনুমোদনে সদস্য দেশগুলোর স্বতঃস্ফূর্ততায় বাংলাদেশ খুবই খুশি। এ পর্যন্ত ১৯৭টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৯১টি প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে এবং ১১০টি দেশ তা অনুমোদন করেছে। আমরা আশা করছি, খুব শিগগির সব দেশ এ চুক্তি অনুমোদন করবে; যা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।’

সর্বশেষ খবর