শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ট্রাম্পে ‘আস্থা’ আবের

প্রতিদিন ডেস্ক

ট্রাম্পে ‘আস্থা’ আবের

ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তার সঙ্গে প্রথম কোনো বিদেশি সরকারপ্রধান হিসেবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সাক্ষাৎ করেছেন। ওই সাক্ষাতের পর আবে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর তার অগাধ আস্থা রয়েছে এবং তারা একটি আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন তিনি। যদিও নির্বাচনের আগে আবের বিশ্বাস ছিল গেল মার্কিন নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন নির্বাচিত হবেন। এর জন্য সে সময় তার সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু সেই সময় ট্রাম্পের সঙ্গে তার কোনো সাক্ষাৎ হয়নি। কিন্তু ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর টনক নড়ে আবের। তিনি অনেকটা মরিয়া হয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা কররেন। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারে ট্রাম্পের সঙ্গে দেড় ঘণ্টার বৈঠক হয় আবের। এটিকে জাপানি প্রধানমন্ত্রী বর্ণনা করেছেন ‘উষ্ণ পরিবেশে খোলামেলা আলোচনা’ হিসেবে। বিবিসি লিখেছে, ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের কিছু রাজনৈতিক মন্তব্যের কারণে জাপানসহ পুরনো মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভবিষ?্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলা যুক্তরাষ্ট্রই পরে জাপানের অন্যতম প্রধান মিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়; অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে সহায়তা করে। ভোটের প্রচারের সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি ট্রান্স-প্যাসিফিক বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করবেন। অর্থনৈতিকভাবে প্রতিবেশী চীনের ক্রমশ আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার বিষয়টি মাথায় রেখে ওই চুক্তিকে সমর্থন দিয়েছিলেন জাপানের আবে। ট্রাম্প এলে চুক্তি বাতিল হতে পারে জেনেও জাপানের পার্লামেন্ট তা অনুমোদন করেছিল। বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর শিনজো আবে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, দুই দেশের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক না থাকলে ভবিষ্যতে এই বন্ধুত্ব অটুট থাকবে না। আজকের আলোচনার পর আমি আত্মবিশ্বাসী, ট্রাম্প এমন একজন নেতা, যার ওপর আমি অগাধ আস্থা রাখতে পারি।’ বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে—তা নিয়ে খুব  বেশি তথ?্য আবে সাংবাদিকদের দেননি। তিনি বলেছেন, তারা আবারও বসতে সম্মত হয়েছেন যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কোনো প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা নেওয়ার আগে তার সঙ্গে জাপানি প্রধানমন্ত্রীর এই সাক্ষােক ‘বিরল ঘটনা’ বলেছে জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন এনএইচকে। বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে এনএইচকে বিস্তারিত তথ্য দিতে না পারলেও দেশটির কয়েকটি সংবাদমাধ্যম বলেছে, ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ছাড়াও উত্তর  কোরিয়া, ওকিনেয়া ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ে আলোচনা হয়েছে শিনজো আবে ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব জেনারেল ফ্লিনকে : অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইকেল ফ্লিনকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার অন্তর্বর্তীকালীন দলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য দিয়েছেন। তবে ফ্লিন এ প্রস্তাবে রাজি কি না তা এখন পর্যন্ত বলেননি। ফ্লিন ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিআইএ) পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে তিনি ট্রাম্পকে পরামর্শ দিয়ে গেছেন। ডিআইএ থেকে চলে যাওয়ার পর ওবামা প্রশাসন ও  পেন্টাগনের কড়া সমালোচকে পরিণত হন ফ্লিন। তিনি জাতীয় নিরাপত্তা পলিসি সংক্রান্ত ইস্যুগুলোতে অনেক সরব ছিলেন। বিশেষ করে, আইএসের বিরুদ্ধে ওবামা প্রশাসনের কৌশল ও পররাষ্ট্র সম্পর্ক সামলানো নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন তিনি। তার দাবি, চরমপন্থা  মোকাবিলায় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে তাকে ডিআইএ থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে তার সমালোচকরা বলছেন, তিনি গোটা সংস্থাকে ভুলভাবে পরিচালিত করেছেন। এ ছাড়া জোর করে পরিবর্তন চাপিয়ে দিতে গিয়ে সংস্থার ভিতর থেকেই তাকে প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে। জেনারেল ফ্লিন আইএস নির্মূলে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর পক্ষে। এ ছাড়া ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনার পক্ষে তিনি। এ দুই অবস্থানই ট্রাম্প শিবির গ্রহণ করেছে।

সর্বশেষ খবর