বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সঙ্গীহীন শাওন ময়ূরী যুবরাজ

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

সঙ্গীহীন শাওন ময়ূরী যুবরাজ

রংপুর চিড়িয়াখানার শাওন, ময়ুরী ও যুবরাজকে নিয়ে দর্শনার্থীদের আগ্রহের কমতি নেই, কর্তৃপক্ষের লাভের অঙ্কও প্রতি বছর বাড়ছে। কিন্তু অরণ্য থেকে দূরে মনুষ্য সমাজে এসে বাঘিনী শাওন, ময়ূরী, জলহস্তী যুবরাজ, মহিলা ভাল্লুকসহ ৯ প্রজাতির প্রাণীর বছরের পর বছর খাঁচায় জীবন কাটছে সঙ্গীহীন অবস্থায়। সঙ্গী না থাকায় এসব প্রাণীর বংশও বৃদ্ধি হচ্ছে না।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ৩০ জুন ঢাকা চিড়িয়াখানায় জন্ম নেয় বাঘিনী শাওন। বাঘ সুলতানের সঙ্গী হিসেবে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে শাওনকে রংপুরে আনা হয়। শাওনকে যখন আনা হয় তখন বাঘ সুলতানের বয়স ১৭ বছর। সুলতান বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়ায় গর্ভধারণ করতে পারেনি শাওন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মারা যায় সুলতান। তখন থেকেই সঙ্গীহীন জীবন কাটছে শাওনের। কোনো পুরুষ সঙ্গী না থাকায় তাদের বংশবৃদ্ধির সুযোগ হয়নি। সঙ্গী থাকলে এতদিন ৮-১০টি বাচ্চা দিত শাওন। ২০১২ সালে রোগে আক্রান্ত হয়ে ছয়টি বাচ্চাসহ মারা যায় ময়ূর। তখন থেকে একাকী দিন কাটছে ময়ূরীর। এ ছাড়া ১০-১২ বছর ধরে সঙ্গীহীন দিন কাটছে মহিলা দুটি ভাল্লুক, জলহস্তী যুবরাজ, মহিলা গাধা ২টি, কোশোয়ারি, ও বেবুনের। সঙ্গী চেয়ে একাধিকবার প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনো ফল হয়নি বলে জানায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। ডেপুটি কিউরেটর ডা. এস এম মোশাররফ হোসেন বলেন, ২২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত রংপুর চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ২৬ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ১০৫ রকমের পাখি এবং ৯৮ প্রজাতির বিভিন্ন সরীসৃপ ও অন্যান্য প্রাণী। এ প্রাণীগুলোর বেশিরভাগ তাদের গড় আয়ুর অর্ধেক সময় পেরিয়ে এসেছে। চিতাবাঘ, অজগরসহ কয়েকটি সাপ মারা যাওয়ায় সেগুলো আর সরবরাহ করা হয়নি। ফলে বেশ কয়েকটি খাঁচা শূন্য পড়ে রয়েছে। তিনি জানান, এ চিড়িয়াখানায় প্রতিবছর আয় বাড়লেও সে তুলনায় প্রাণী নেই। চলতি বছরের জুন মাসে চিড়িয়াখানার গেট, ভিতরের ক্যান্টিন, লেক, শিশুপার্ক, বাগান এবং গাড়ি পার্কিং ইজারা দেওয়া হয়েছে ৫৭ লাখ টাকায়। এর মধ্যে শুধু গেট ইজারা দেওয়া হয় ৩৮ লাখ টাকায়। পর্যাপ্ত প্রাণী থাকলে আয় আরও বাড়ত। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সময় নতুন প্রাণী পাঠানোর উদ্যোগ নিলেও তা পাঠায়নি।

সর্বশেষ খবর