বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দিয়াজের ‘আত্মহত্যা’ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান পরিবারের

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

দিয়াজের ‘আত্মহত্যা’ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান পরিবারের

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুর রহস্যজট যেন খুলছে না। গতকাল বিকালে তার লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পায় পুলিশ। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যাজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও সেই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে তার পরিবার। একই সঙ্গে আইনগত লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এদিকে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে গতকালও ট্রেন অবরোধ ও ভাঙচুর করেছে দিয়াজের অনুসারীরা। লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) রেজাউল মাসুদ বলেন, ‘বুধবার বিকালে ফরেনসিক বিভাগের তৈরি করা দিয়াজের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। ওই প্রতিবেদনে একজন অধ্যাপক ও দুজন সহকারী অধ্যাপক স্বাক্ষর করেছেন। আত্মহত্যাজনিত কারণে দিয়াজের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ায় এখন নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। তাই আমরা মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছি এটি আত্মহত্যা। কিন্তু দিয়াজের পরিবার চাইলে নিজেদের মতো করে আইনের আশ্রয় নিতে পারে। এটি তাদের নিজস্ব বিষয়।’ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিয়াজের বড় বোন জুবাইদা সরওয়ার নিপা বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত, দিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে। প্রশাসনের মনগড়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। দিয়াজ হত্যার সুষ্ঠু বিচার পেতে আমরা আইনি লড়াই করব। আগামীকাল (আজ) সংবাদ সম্মেলন করে দিয়াজ হত্যার যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ গণমাধ্যমে উপস্থাপন করব।’ তিনি বলেন, ‘দিয়াজের শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যে রুমে তার লাশ পাওয়া যায়, এর অবস্থা দেখে যে-কেউ বলবে তা আত্মহত্যা নয়। প্রশাসন একটি পক্ষকে রক্ষা করতে এটিকে আত্মহত্যা বলছে।’এদিকে সকালে হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ স্টেশন এলাকায় ট্রেন অবরোধ ও ভাঙচুর করেছে দিয়াজের অনুসারীরা। এ সময় তারা দিয়াজ ‘হত্যাকারীদের’ গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান। এর আগে সোমবার নগরী ও হাটহাজারীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে দিয়াজ সমর্থকরা। ষোলশহরের স্টেশনমাস্টার মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বুধবার সকালে ষোলশহর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর ফতেয়াবাদ স্টেশনের কাছে ট্রেনটি আটকে দেওয়া হয়। এর পর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ দীর্ঘক্ষণ বন্ধ ছিল। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।’ প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে চবি ক্যাম্পাস থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর থেকে হত্যার অভিযোগ করে আসছে দিয়াজের পরিবার ও তার অনুসারীরা।

সর্বশেষ খবর