বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জাহাঙ্গীরনগরে অতিথি পাখি

নাহিদুর রহমান হিমেল

জাহাঙ্গীরনগরে অতিথি পাখি

চারদিকে শীতের আবহ। রাতে কুয়াশা, সকালে শিশিরকণার ঝলকানি। ঋতুর এই সন্ধিক্ষণে প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। বরাবরের মতো এবারও রক্তকমল শোভিত লেকগুলোয় আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট-বড় ১৪-১৫টি লেক থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হলসংলগ্ন লেক, জিমনেসিয়াম-সংলগ্ন লেক ও ডব্লিউআরসি (ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ সেন্টার)-সংলগ্ন লেকে অতিথি পাখির পদচারণ বেশি। প্রতি বছরই উত্তরের শীতপ্রধান সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, জিনজিয়াং ও ভারত থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখি দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশে আসে। মূলত নভেম্বরের  প্রথম দিকে এরা আসে, আবার মার্চের শেষ দিকে ফিরে যায়। এই প্রেক্ষাপটে একদিকে জাবির লেকগুলো পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে, পাশাপাশি এদের দেখার জন্য ভিড় করছে উত্সুক মানুষ। ঝাঁকে ঝাঁকে আসা পাখিরা লেকের জলে মেতে থাকছে জলকেলী আর ডুব-সাঁতারে। কখনো এরা চক্রাকারে উড়ছে ক্যাম্পাসের মুক্ত আকাশজুড়ে। সব মিলিয়ে পাখির কিচিরমিচিরে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে মধুময় সুরের আবহ; যা দেখে দর্শক বিমোহিত হচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, দর্শনার্থীদের জন্য এবারও পাখিমেলা, ২০১৭ আয়োজন করা হচ্ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে এ মেলা বসছে আগামী ৬ জানুয়ারি।

পাখি বিশেষজ্ঞ ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান জানান, বাংলাদেশে মোট ৬৯০ প্রজাতির পাখির মধ্যে প্রায় ২৩৮ প্রজাতির অতিথি পাখি আছে। ১৯৮৬ সাল থেকে এ ক্যাম্পাসে অতিথি পাখির পদচারণ। সে সময় জাহাঙ্গীরনগরে ৯০ প্রজাতির পাখি দেখা যেত। বর্তমানে ১৯৫ প্রজাতির পাখি দেখা যাচ্ছে, যার মধ্যে ১২৬টি দেশি ও ৬৯টি পরিযায়ী বা অতিথি প্রজাতির। দেশি প্রজাতির মধ্যে ৭৮টি ক্যাম্পাসে নিয়মিত থাকছে। তিনি আরও বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব অতিথি পাখি আসে এর বেশির ভাগই হাঁস-জাতীয় ও পানিতে বসবাস করা। এর মধ্যে প্রায় ১০ প্রজাতির হাঁস-জাতীয় পাখি ক্যাম্পাসে দেখা যায়। এর মধ্যে ছোট সরালি, বড় সরালি, খঞ্জনা, পাতারি হাঁস, ভূতিহাঁস, খুন্তেহাঁস, লেঞ্জাহাঁস, গার্গেনী, ঝুঁটিহাঁস প্রধান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর