সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিমান বাহিনীকে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিমান বাহিনীকে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুকে মর্যাদাপূর্ণ ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করে বিমান বাহিনীর সদস্যদের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম করে গড়ে ওঠার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যরা তাদের দক্ষতা, দেশপ্রেম, নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির জন্য আরও অনেক সাফল্য বয়ে আনবে।

গতকাল সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলা সেনানিবাসের এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনারা নিজেদের গড়ে তুলবেন এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সর্বোতভাবে সক্ষম হবেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছলে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর এয়ার অধিনায়ক এয়ার কমডোর মো. মফিদুর রহমান তাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীর সদস্যদের দক্ষ ও আদর্শ বিমানসেনা হিসেবে গড়ে ওঠার তাগিদ দিয়ে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের বিনিময়ে সংগ্রহ করা যুদ্ধ উপকরণের কার্যকর ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে আরও বেশি যত্নবান হতে নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিমান বাহিনীর সদস্যরা ইতিমধ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দেশের জন?্য গৌরব ও সম্মান বয়ে এনেছেন। এ বাহিনীর আধুনিকায়নে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আধুনিকায়নের মাধ্যমে বিমান বাহিনী দেশ ও জাতির উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আরও সক্রিয় অবদান রাখতে সক্ষম হবে। শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে, আকাশ প্রতিরক্ষা এবং শত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধে এই ঘাঁটির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিমান বাহিনীর এই ঘাঁটিটি ঢাকা তথা বাংলাদেশের আকাশ প্রতিরক্ষার মূল ঘাঁটি হিসেবে আজ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর পরিচালনায় এই ঘাঁটি প্রত্যক্ষ সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে এবং জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় অসামরিক প্রসাশনকে সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় এই ঘাঁটির ‘পারদর্শিতা’ প্রশংসিত হয়েছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সীমিত যুদ্ধাস্ত্র নিয়েও পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে আকাশযুদ্ধে অংশ নেওয়ার ‘গৌরবের’ কথা উল্লেখ করে বলেন, একটি স্বাধীন জাতির আকাশসীমাকে নিরাপদ ও শত্রুমুক্ত রাখাই সে দেশের বিমান বাহিনীর মূল দায়িত্ব।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই ঘাঁটিটি পূর্ণাঙ্গ জনবল এবং যন্ত্রাংশসহ বঙ্গবন্ধুর নামানুসারে ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে এ ঘাঁটিটি বিমান বাহিনীর সর্ববৃহৎ যুদ্ধ বিমান ঘাঁটি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিতে পৌঁছানোর পর বিমান বাহিনীর প্যারেড পরিদর্শন করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিকে তিনি ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করেন। কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন রেজা এমদাদ খান। ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য জাতীয় পতাকাসহ একটি হেলিকপ্টারের পাস অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়াও অত্র ঘাঁটি হতে পরিচালিত মিগ-২৯, এফ-৭ বিজি ও এফ-৭ বিজি ১ বিমানের মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট পরিচালনা করা হয়। পরে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড সমুন্নত রাখার জন্য মোনাজাত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী পরে পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। তিনি বিমান বাহিনী প্রধান ও নির্বাচিত বিএএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোকচিত্রে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টামণ্ডলী, এমপি, বৈদেশিক কূটনৈতিক, ভারপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী প্রধান ও নৌবাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারসহ সামরিক, আধা-সামরিক ও অসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর