সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
মিতুর মোবাইল কার হাতে

হাসপাতালে চাকরি নিলেন বাবুল

আলী আজম ও মুহাম্মদ সেলিম

হাসপাতালে চাকরি  নিলেন বাবুল

আলোচিত সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। রাজধানীর পোস্তগোলায় বাস্তবায়নাধীন বেসরকারি আদ-দ্বীন ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন তিনি। গত ১ নভেম্বর থেকে          এই হাসপাতালে বাবুল নিয়মিত অফিস করছেন। গতকাল সন্ধ্যায় বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। স্ত্রী মিতু হত্যার পর থেকে বাবুল রাজধানীর খিলগাঁওয়ে শ্বশুর বাড়িতেই থাকছেন। তার শ্বশুর জানান, বাবুল সকালে বাসা থেকে বের হয়ে সন্ধ্যায় ফিরছেন। দুই সন্তান আক্তার মাহমুদা মাহির ও তাবাসসুম তাজমিন টাপুরের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নতুন চাকরি নিয়েছেন। এতে বাবুল মানসিক চাপ থেকে কিছুটা হলেও বের হয়ে আসতে পারবেন। মোশাররফ হোসেন বলেন, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে মাহির ও টাপুরকে স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। মাহিরকে প্রথম শ্রেণি এবং টাপুরকে প্লেতে ভর্তি করা হয়। তাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসার কাজটি তিনিই করছেন। সন্তানদের স্কুলে ভর্তির পর ১ নভেম্বর থেকে বাবুল হাসপাতালে চাকরি নেন। অবসর পেলেই বাবুল সন্তানদের সময় দিচ্ছেন। স্ত্রী মিতু খুন হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতি চান বাবুল। পরে চাকরি ফিরে পাওয়ার আবেদন করেলও তা ফেরত পাননি। এরপর থেকে নিজেকে আড়াল করে নেন বাবুল। নানা নাটকীয়তার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বাবুলকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এদিকে সাত মাসের তদন্তেও পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি। গত ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন বাবুলের স্ত্রী মিতু। এ ঘটনায় বাবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় সাতজন গ্রেফতার হন। এর মধ্যে ৫ জুলাই পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে রাশেদ ও নবীর মৃত্যু হয়। হত্যায় ব্যবহূত অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় বাকলিয়া থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়। অস্ত্র মামলায় দুই আসামি ভোলা ও তার কর্মচারী মনিরের বিচার শুরু হয়েছে। তবে হত্যা মামলার তদন্ত এখনো শেষ করতে পারেনি চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের ‘মাস্টারমাইন্ড’ মুছা ও কালুকে খুঁজছে পুলিশ।

মিতুর সিম ব্যবহারকারী কে? : বাবুলের স্ত্রী মিতু খুনের সময় খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন কে ব্যবহার করছে?— এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে পরিবারের সদস্যদের মাঝে। মিতুকে খুনের পর কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী খুনিরা নিয়ে যায় মোবাইল সেট ও সিম। নিয়ে যাওয়ার পর ওই মোবাইল দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি খোলা পাওয়া গেছে মিতুর ওই সিম। মিতুর পরিবারের দাবি, সিম ব্যবহারকারীকে গ্রেফতার করা হলে উন্মোচন হবে এ হত্যাকাণ্ডের অজানা অনেক তথ্য। মিতুর মা সাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘কয়েক দিন আগে থেকে কেউ একজন মিতুর সিম ব্যবহার করছে। ওই নম্বরে ফোন দেওয়া হলে ফোন রিসিভ করা ব্যক্তি নিজেকে সিএনজি ট্যাক্সিচালক দাবি করেন। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন। মিতু খুনের সময় হারিয়ে যাওয়া ফোনসেট ওই ব্যক্তির হাতে কীভাবে গেল? তাকে গ্রেফতার করলে অনেক তথ্য জানা যাবে। মিতুর সিম অন্য ব্যক্তি ব্যবহার করার বিষয়টি এরই মধ্যে পুলিশকে জানানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘মিতুর সিম কেউ একজন ব্যবহার করছে বলে শুনেছি। এ সিম যে ব্যবহার করছে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার চেষ্টা চলছে।’ জানা গেছে, কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারীরা নিয়ে যায় মিতুর ব্যবহার করা মোবাইল সেট। এরপর থেকে দীর্ঘ সময় তা বন্ধ ছিল। গত মাসের শেষের দিকে হঠাৎ খোলা হয় মিতুর ব্যবহার করা সিম। ফোনালাপে ওই ব্যক্তি জানান, হাতিরঝিলে ওই সিম খুঁজে পেয়েছি। মিতুর পরিবারের দাবি, ওই সিম ব্যবহারকারীকে গ্রেফতার করা গেলে মিলবে এ হত্যাকাণ্ডের অজানা প্রশ্নের উত্তর।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর