মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিমানবন্দর টু ঝিলমিল বাস ট্রানজিট

কাজ শুরু জানুয়ারিতে অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক

নিজামুল হক বিপুল

রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল প্রকল্প পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) রুট-৩। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে তিন ধাপে নির্মাণ করা হবে এটি। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই ও পূর্ণাঙ্গ নকশা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। আগামী মাসেই বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করে প্রকল্পটির জন্য পরিকল্পনা কমিশনের সঙ্গে চুক্তি করবে। এরপর দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রথম ধাপের নির্মাণকাজ শুরু হবে। আর এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাংক কার্যত নতুন করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল প্রকল্প পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাস র‌্যাপিট ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রায় তিন বছর আগে নিজস্ব অর্থে প্রাক-সমীক্ষা যাচাই শেষে পূর্ণাঙ্গ নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ করে বিশ্বব্যাংক। কিন্তু পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্মাণকাজ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের মতবিরোধ দেখা দিলে বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপর তারা সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সব প্রকল্প থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। ফলে প্রাক-সমীক্ষা যাচাই এবং পূর্ণাঙ্গ নকশা তৈরির কাজ করার পরও বিআরটি রুট-৩ প্রকল্পের কাজ আর এগোয়নি। দীর্ঘ সময় পর বিশ্বব্যাংক এখন নতুন করে এই প্রকল্পের কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। শুধু তাই নয়, তারা সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আবারও কাজ করতে চায়। গতকাল বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের আগ্রহের কথা প্রকাশ করে। সেতুমন্ত্রীও ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন বলে জানা গেছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিআরটি রুট-৩ এর পুরো কাজটি হবে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে। মোট তিনটি ধাপে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। প্রথম ধাপে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত নয় কিলোমিটার সড়কে শুধু আর্টিকুলেটেড বাস চলাচলের সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে করিডর নির্মাণ করবে। এই প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংক ব্যয় করবে ২৫০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এ বিষয়েই আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করে পরিকল্পনা কমিশনের সঙ্গে চুক্তি করবে। এই প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে মহাখালী থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত বিআরটি করিডর নির্মাণ হবে। আর তৃতীয়  ও শেষ ধাপে নির্মাণ হবে গুলিস্তান থেকে ঝিলমিল প্রকল্প পর্যন্ত। জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত সড়কে যাত্রী উঠানামার জন্য মোট পাঁচটি স্টেশন থাকবে। মোট ১৩০টি আর্টিকুলেটেড বাস এই করিডরে চলাচল করবে। এ প্রকল্পের আওতায় মহাখালীতে শুধু বিআরটি বাস চলাচলের জন্য একটি ফ্লাইওভার এবং মহাখালী এবং কেরানীগঞ্জে দুটি ডিপো নির্মাণ করা হবে। সূত্র জানায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আরামবাগ থেকে ঝিলমিল পর্যন্ত যে ফ্লাইওভার নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে তার সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিআরটি রুট-৩ প্রকল্পের কিছু কিছু স্থানে সাংঘর্ষিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক রাজউকের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করেছে। এখন বিআরটি রুট-৩ প্রকল্প বাস্তবায়নে আর কোনো বাধা থাকছে না।

সর্বশেষ খবর