মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
ডিজে থেকে অস্ত্র বিক্রেতা

র‌্যাব-অভিযানে ৫ অস্ত্র ব্যবসায়ী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর ও বাড্ডা এলাকায় র‌্যাব অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ৫ জন অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রবিবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে প্রথমে আব্দুল্লাপুর থেকে তিনজন পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে বাড্ডা থেকে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলো, রুবেল শেখ (২৪), সোহেল  মোল্লা (২৪), বাহেস শেখ (৩২), আব্বাস মিয়া (২৫) ও আরিফুল ইসলাম (২৫)। তাদের কাছ থেকে চারটি বিদেশি পিস্তল, ৩৮টি গুলি ও নয়টি ম্যাগাজিন অস্ত্র পাচারে ব্যবহূত একটি পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। তবে মূল হোতা গুলশান থানা ছাত্রলীগ নেতা তারেক আহমেদ ওরফে অনিক (২৮) পালিয়ে গেছে। অনিকের বাবা যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সহসভাপতি আবু তাহের আহমেদের দাবি অণিক অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। সে গুলশান থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া  সেন্টারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, মূলত অস্ত্র ব্যবসায়ী অনিকের (২৮) খোঁজেই আব্দুল্লাহপুর খন্দকার পেট্রোল পাম্প এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে তাকে না পাওয়া গেলেও রুবেল, সোহেল এবং বাহেস শেখকে পাওয়া যায়। অস্ত্রগুলো অনিককে দেয়ার কথা ছিল তাদের। দুই বছর ধরে তারা রাজশাহী সীমান্ত থেকে অস্ত্র এনে অনিককে সরবরাহ করছিল। তাদের দেয়া তথ্য অনুসারে উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনিকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আব্বাস ও আরিফুলকে গ্রেফতার করা হয়। ফসকে যায় ধূর্ত অনিক। র‌্যাব-১ অধিনায়ক আরও বলেন, রাজধানীর মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা করেছেন অনিক। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে ডিস্ক জকির (ডিজে) পেশা  বেছে নেন। এরপর মাদক ব্যবসা, বালুর গদি দখল ও একপর্যায়ে অস্ত্র ব্যবসায় জড়ান। জোর করে এলাকায় নির্মাণসামগ্রী সরবরাহের কাজও করত সে। রাজশাহীর সীমান্ত দিয়ে প্রতিটি অস্ত্র ২৫-৩০ হাজার টাকায় কিনে রাজধানীতে ৭৫ থেকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করত। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অনিক অস্ত্র, মাদক, দেহ ব্যবসা করে অল্প দিনের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ উপার্জন করে অনিক। এ ছাড়া গত এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে ৪৫  থেকে ৫০টি অস্ত্র কেনাবেচা করেছে। তবে অনিকের পরিবার বলছে, তারা এসব কিছু জানেন না। ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তুহিন মো. মাসুদ বলেন, এলাকায় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা বলতেন অণিক। পাশাপাশি নিজেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স বলেও পরিচয় দিতেন। হাতবদলের মাধ্যমে এসব অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে আসতেও পারে। তবে এ ব্যাপারে তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। অনিকের বাবা আবু তাহের আহমেদ বলেন, অণিক অস্ত্র ব্যবসা করে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাদের বাড়িতে ও ছেলের শ্বশুরবাড়িতেও গত ৮/১০ দিন আগে র‌্যাব এসেছিল। তখন থেকে ও ভয়ে পলাতক আছে।

 

সর্বশেষ খবর