বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সব ধরনের বিদ্যুৎ প্রকল্প এখন বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সব ধরনের বিদ্যুৎ প্রকল্প এখন বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে

১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাইলফলক অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এ প্রেক্ষাপটে ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিশাল কর্মপরিকল্পনা নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হয়েছে বিদ্যুেমলা। এ মেলায় সব ধরনের বিদ্যুৎ প্রকল্পের পসরা সাজানো হয়েছে। বিদ্যুৎ সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল সকালে এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নেপালের জ্বালানিমন্ত্রী জনার্দন শর্মা। সংশ্লিষ্টরা জানান, এ মেলা চলবে সপ্তাহ জুড়ে। এখানে সারা দেশের বিদ্যুৎ প্রকল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যতের চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। ‘অদম্য বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ উপলক্ষে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আইসিসিবির নবরাত্রী হলে আয়োজিত এ মেলায় অংশ নিয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানির স্টল। এতে পুরো প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। বাংলাদেশকে আলোকিত করতে বিদ্যুৎ প্রকৌশলীরা নিরলস কাজ করছেন— স্টলগুলোয় তা-ই জীবন্ত করে প্রদর্শন করা হচ্ছে। বৃহৎ প্রকল্পের পাশাপাশি তুলে ধরা হচ্ছে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিভিন্ন উপকরণ। বাসাবাড়িতে ছোট্ট পরিসরে কীভাবে বিদ্যুৎ কাজ করে, তারও প্রযুক্তি তুলে ধরা হচ্ছে এ মেলায়। সৌরবিদ্যুতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল কীভাবে আলোকিত হয়েছে, সেসব অর্জনও এ মেলায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে।

বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা গেছে, তাতে রয়েছে সৌরবিদ্যুতের ছোট ছোট নানা প্লান্ট। ব্যাটারির সঙ্গে সৌর বোর্ড ব্যবহার করে সাধারণ যন্ত্রাংশ দিয়ে মাত্র এক ঘণ্টার সেটআপে জ্বালানো হচ্ছে লাইট। বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কীভাবে কাজ করে, তার রেপ্লিকা তুলে ধরে দর্শকদের দেখানো হচ্ছে বায়ু ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কৌশল। একটি স্টলে গিয়ে দেখা গেছে, ১৫ থেকে ২০টি ছোট পাখা ঘুরছে। এগুলো বিদ্যুতের মাধ্যমে ঘুরলেও তাতে প্রাকৃতিক পরিবেশ তুলে ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়া দেখানো হচ্ছে। আরেক স্টলে দেখা গেছে, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাসের পাইপ এসে প্লান্টে যোগ হয়েছে। এর ফলে বিশাল সব মেশিন কাজ করছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাকা ঘুরছে। মনে হয়েছে, চোখের সামনেই উৎপাদিত বিদ্যুৎ গিয়ে যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। মেলায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্ট, কয়লাভিত্তিক প্লান্ট, বায়ুচালিত প্লান্ট, পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রমের রেপ্লিকা তৈরি করে দর্শনার্থীর সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষা করে কীভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, সবই তুলে ধরা হচ্ছে মেলায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ বিতরণে সিস্টেম লস ১৫ দশমিক ৬৭ থেকে ১০ দশমিক ৯৬ শতাংশে নেমে এসেছে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার ও ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব মহাপরিকল্পনা সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে ৩০টির বেশি স্টল নিয়ে সাজানো হয়েছে মেলা। ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করায় আজ সন্ধ্যা ৬টায় হাতিরঝিলে আলোক উৎসব উদ্?যাপন করা হবে, যা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর