বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আবাসে সোচ্চার নিউইয়র্ক প্রবাসীরা

প্রতিদিন ডেস্ক

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আবাস এবং বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারীদের ত্রাণসহায়তার পাশাপাশি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করে নিউইয়র্কে মানববন্ধন হয়েছে। এদিকে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে খাদ্য ঘাটতি। তাদের কারণে বছরে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করতে হয় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে। নিউইয়র্ক থেকে এনআরবি নিউজ : রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আবাস এবং বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারীদের ত্রাণসহায়তার পাশাপাশি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে মানববন্ধন হয়েছে। ৬ ডিসেম্বর এ মানববন্ধনের আয়োজন করে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ সোসাইটি। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতায় ছবিসংবলিত পোস্টার, ব্যানার আর প্লাকার্ড হাতে লোকজনের এ সমাবেশ সর্বস্তরের কূটনীতিক ও ট্যুরিস্টদের দৃষ্টি কাড়ে। ট্যুরিস্টরা জানতে চান, ‘এখনো কেন জাতিসংঘ নির্যাতনকারীদের দমনে পদক্ষেপ নেয়নি! তাহলে জাতিসংঘের কাজ কী?’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন অ্যাডভোকেট এন মজুমদার, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট ওসমান চৌধুরী, টিপু সুলতান, আবদুস শহীদ, গিয়াস আহমেদ, রুহুল আমিন, লুত্ফর রহমান লাতু, মফিজউদ্দিন, মহিউদ্দিন ইউসুফ, শাহ শহীদুল হক সাঈদ, ফারুক হোসেন মজুমদার, রফিকুল ইসলাম, শফিকুল আলম, আজমল হোসেন কুনু প্রমুখ। রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী আবাস প্রতিষ্ঠা এবং দেশত্যাগীদের যথাযথ পুনর্বাসন দাবিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বর্বরতা চালানোকারীদের মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে সোপর্দের দাবিও জানানো হয়। দুই সপ্তাহে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনেসহ মোট দশ স্থানে প্রবাসীদের বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় রোহিঙ্গা ইস্যুতে। এদিকে আমাদের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি মো. আয়ুবুল ইসলাম জানান, রোহিঙ্গাদের কারণে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ জেলা কক্সবাজারে প্রতিদিনই বাড়ছে খাদ্য ঘাটতি। তাদের কারণে বছরে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করতে হয় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে, যার মূল্য ২৫৩ কোটি ৫৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নির্যাতনের কারণে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের ফলে খাদ্য ঘাটতি আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য অধিদফতরের উপপরিচালক আ ক ম শাহারিয়ার। জেলা খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২৪ লাখ ৬৯ হাজার ৯৬৫ জনের জন্য বছরে খাদ্যের চাহিদা ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন। জেলায় বছরে খাদ্য (চাল) উৎপাদন হয় ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭০ মেট্রিক টন, যা চাহিদার চেয়ে ২৫ হাজার ২১৬ মেট্রিক টন বেশি। কিন্তু জেলায় ৫ লাখ রোহিঙ্গার কারণে বছরে প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিক টন চাল বেশি প্রয়োজন, যার মূল্য ২৫৩ কোটি ৫৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া বছরে উৎপাদিত খাদ্য থেকে পর্যটকদের জন্য ১৬ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য প্রয়োজন; যে ঘাটতি বার্ষিক উৎপাদন থেকে পূরণ সম্ভব বলে জানিয়েছেন উপপরিচালক শাহারিয়ার। তবে প্রতিদিন যে হারে রোহিঙ্গা বাড়ছে তা অব্যাহত থাকলে খাদ্য ঘাটতি চরম আকার ধারণ করবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। এদিকে, মিয়ানমার সরকারের রোহিঙ্গা দমননীতির কারণে ৯ নভেম্বর থেকে প্রতিদিনই অনুপ্রবেশ ঘটছে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার তথ্যমতে, চলমান রোহিঙ্গা সংকটের কারণে ১০ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ৫ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে বর্তমানে ১০ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ঘাটতির সঙ্গে নতুন করে খাদ্য ঘাটতি বৃদ্ধি করেছে। রোহিঙ্গা সংকট স্থায়ী হলে কক্সবাজারে খাদ্য ঘাটতি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করার আশঙ্কা রয়েছে। তবে গত রাতে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ সর্বশেষ ২১ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর