শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় বিদ্যুৎমেলা

বিনা খরচে গ্যাস উৎপাদন দেখতে মানুষের ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিনা খরচে গ্যাস উৎপাদন দেখতে মানুষের ঢল

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বিদ্যুৎমলার দ্বিতীয় দিনে গতকাল ছিল উদ্যোক্তা, প্রকৌশলী, গ্রাহকসহ দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড়। ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন উপলক্ষে ৭ ডিসেম্বর শুরু হওয়া চার দিনের এ মেলা চলবে আগামীকাল পর্যন্ত। আইসিবিবির বিশাল পরিসরে এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে সরকারি-বেসরকারি ১২৫ কোম্পানির ৩২০টি স্টল। প্রতিটি স্টল যেন একেকটি বাস্তব প্রকল্প। চারটি ভেন্যুতে মেলায় বৃহৎ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে শুরু করে ঘরে রান্নায় ব্যবহারের জন্য গ্যাস উৎপাদনের ছোট কোম্পানির স্টলও রয়েছে। সানশাইন বিডির স্টলে গিয়ে দেখা যায়, গৃহস্থালি বর্জ্য, আবর্জনা দিয়ে ছোট একটি প্লান্টে বিনা খরচেই উৎপাদন করা হচ্ছে গ্যাস; যা দিয়ে বাড়ির সব রান্নার কাজ করা যাবে। মাত্র ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচে এ প্লান্ট করা যায়। বাড়িতে ছোট্ট পরিসরেই এটি করা সম্ভব। গ্রাহকরা স্টলে অর্ডার দিলে বাড়ি গিয়ে স্থাপন করে দেওয়া হয়। মেলায় অংশ নিয়েছে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্টল। এ প্রকল্পের পুরো রেপ্লিকা তৈরি করে সাজানো হয়েছে। আছে আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্ট। আইসিসিবির নবরাত্রী হলে অংশ নিয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি। এসব স্টলে পুরো প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। দর্শকদের সামনেই যেন উৎপাদন হচ্ছে বিদ্যুৎ। বাংলাদেশকে আলোকিত করতে বিদ্যুৎ প্রকৌশলীরা যেভাবে নিরলস কাজ করছেন সেগুলোই জীবন্ত করে প্রদর্শন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা গেছে, সৌরবিদ্যুতের ছোট প্লান্ট, ব্যাটারির সঙ্গে একটি সৌর বোর্ড, সাধারণ যন্ত্রাংশ দিয়ে মাত্র এক ঘণ্টায় সেটআপ করেই লাইট জ্বলছে। বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কীভাবে কাজ করে তার রেপ্লিকা তুলে ধরে দর্শকদের দেখানো হচ্ছে কীভাবে উৎপাদন হয় বায়ুবিদ্যুৎ। আরেক স্টলে দেখা গেছে, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাসের পাইপ এসে প্লান্টে যোগ হয়েছে। এর পরই বিশাল সব মেশিন কাজ করছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাকা ঘুরছে। মনে হচ্ছে, চোখের সামনেই উৎপাদিত বিদ্যুৎ গিয়ে যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। মেলায় গ্যাসভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট, কয়লাভিত্তিক প্লান্ট, বায়ুচালিত প্লান্ট, পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রমের রেপ্লিকা তৈরি করে দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষা করে কীভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় সেসব তুলে ধরা হয়েছে এ মেলায়। গতকাল মেলায় ‘টেকনোলজি অব কোল-বেইজড পাওয়ার প্লান্টস’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ‘আমাদের প্রচুর প্রযুক্তি রয়েছে। একে যথাযথভাবে কাজে লাগানো প্রয়োজন। ২০২১ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার। গত সাত বছরে বিদ্যুৎ বণ্টনে শহর ও গ্রামের পার্থক্যও কমে আসছে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে। উন্নত বিশ্বের সুযোগ-সুবিধা যেন দেশেই পাওয়া যায়, সে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির জোগান। এ ক্ষেত্রে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের বিকল্প নেই। সেমিনারে স্কাইপের মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন বিজ্ঞানী আরশাদ মনসুর।

সর্বশেষ খবর