সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলা

নিজের ফাঁসি দাবি করলেন বদরুল

শাহ দিদার আলম নবেল, সিলেট

নিজের ফাঁসি দাবি করলেন বদরুল

তখন বেলা ১১টা। সিলেটের আদালতপাড়ায় হাজির গণমাধ্যম কর্মীরা। ওই সময় ‘বদ’ হিসেবে কুখ্যাতি পাওয়া ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমকে আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। গণমাধ্যম কর্মীদের দেখেই বদরুল আলম চিৎকার করে নিজেই নিজের ফাঁসি দাবি করেন। একই সঙ্গে খাদিজাকে নিয়ে বিষোদগারও করেন তিনি। গতকাল রবিবার সিলেটের আদালতপাড়ায় বদরুল আলমের এমন আচরণ ছিল ‘টক অব দ্য টাউন’। আদালতে পুলিশের গাড়ি থেকে নামার পরই বদরুল আলম গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে চিৎকার করতে থাকেন। তিনি খাদিজা বেগম নার্গিসকে ‘বেইমান, বিশ্বাসঘাতক, মোনাফিক, প্রতারক’ বলে অভিহিত করেন। খাদিজাকে ব্যঙ্গ করে বদরুল বলেন, ‘খাদিজার মতো মেয়ে হয় না, ও খুব ভালো!’ উত্তেজিত বদরুল নিজের ফাঁসির দাবিতে চিৎকার করে বলেন, ‘খাদিজার জয় হোক, আমার ফাঁসি হোক।’ আদালতপাড়ায় বদরুল আলমের এমন বক্তব্য গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সিলেট নগরীতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষ বদরুলের এমন মন্তব্যকে ‘বদের বদকাজ’ বলেও অভিহিত করেছেন। এদিকে গতকাল কলেজ শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম নার্গিসকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের বিরুদ্ধে আরও ১৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে সাক্ষীরা সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আগামী সাক্ষ্যগ্রহণের ধার্য তারিখে খাদিজাকে হাজির করার নির্দেশ দেন। আদালতের এপিপি মাহফুজুর রহমান জানান, খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় যে ১৫ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন খাদিজার বাবা মাসুক মিয়া, মা মনোয়ারা বেগম, বদরুলের জবানবন্দি গ্রহণকারী বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা, ওসমানী হাসপাতালের ডাক্তার আতাউল গণি, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ প্রমুখ। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর ১৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছিলেন। সব মিলিয়ে ৩২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো। তিনি আরও জানান, আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৫ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করেছেন। ওই দিন স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক এবং খাদিজাকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। গত ৮ নভেম্বর খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট নগরীর শাহপরান থানার এসআই হারুনুর রশীদ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে ১৫ নভেম্বর আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেন এবং ২৯ নভেম্বর বদরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর এমসি কলেজের পুকুরপাড়ে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম। এ ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেন। পরে শাবি থেকে বদরুলকে চিরতরে বহিষ্কার করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর